মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা (আইআরএস)-এ কর্মী ছাঁটাই এবং প্রশাসনিক পরিবর্তনের কারণে কর ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তবে এই বিশৃঙ্খলার মাঝেও, করদাতাদের ট্যাক্স ফাইল করা এবং রিফান্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর বিভাগের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে, আইআরএস-এর শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। ফেব্রুয়ারী মাসে প্রায় ৬,৭০০ অস্থায়ী কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। তাদের মধ্যে কয়েকজন ফেডারেল আদালতের নির্দেশে হয়তো তাদের চাকরি ফিরে পেতে পারেন।
এছাড়া, প্রায় ৫,০০০ কর্মচারী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন এবং মে মাসে আরও প্রায় ৬,৮০০ কর্মী ছাঁটাই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্মীদের এই আসা-যাওয়ার মাঝে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, আইআরএস-এর ডেটা সিস্টেমে প্রবেশাধিকার নিয়ে সরকারের অভ্যন্তরীণ বিভাগের কড়াকড়ি। এমন পরিস্থিতিতে, করদাতাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বিলম্ব হতে পারে।
বর্তমানে, আইআরএস-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ট্যাক্স ফাইল করা এবং রিফান্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই চলছে। করদাতারা সময়মতো তাদের রিফান্ড পাচ্ছেন।
তবে, কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। যেমন, করদাতাদের বকেয়া পরিশোধের জন্য কিস্তি তৈরি করতে এবং বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তিতে দেরি হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কর্মীদের অভাবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। কারণ, কর্মী সংখ্যা কমলে স্বাভাবিকভাবেই কাজগুলি সম্পন্ন করতে বেশি সময় লাগবে। এর ফলে করদাতাদের পরিষেবা পেতেও সমস্যা হবে।
আইআরএস-এর সাবেক কমিশনার ড্যানি ওয়ারফেল জানিয়েছেন, সরকারের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে আইআরএস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই মুহূর্তে কর্মীদের অভাব দেখা দিলে রাজস্ব সংগ্রহে প্রভাব পড়তে পারে।
পরিসংখ্যান বলছে, চলতি করবর্ষে (২৭শে জানুয়ারি থেকে ১৫ই এপ্রিল) এখন পর্যন্ত ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় সামান্য কম। তবে রিফান্ড বিতরণের সংখ্যা এবং গড় রিফান্ডের পরিমাণ উভয়ই বেড়েছে।
৭ই মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৪ কোটি ৩৬ লক্ষ রিফান্ড দেওয়া হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৫% বেশি। প্রত্যেক করদাতার গড় রিফান্ড এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩,৩২৪ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৬% বেশি।
বর্তমানে কর্মীদের অভাব এবং প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণে ভবিষ্যতে কর আদায়ে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই অবস্থায়, সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় সঠিক নজরদারি রাখা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, একটি দেশের উন্নয়নে সঠিক কর ব্যবস্থা অপরিহার্য।
তথ্য সূত্র: সিএনএন