ফেলে দিন অপ্রয়োজনীয়! ঘর গোছানোর সহজ উপায় যা জানা জরুরি

ঘরের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা: পুরনো ধারণার বাইরে নতুন পথের সন্ধান।

আমরা সবাই নিজেদের ঘর পরিপাটি রাখতে চাই। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জিনিস জমে যায়, যা আমাদের জীবনকে কঠিন করে তোলে।

সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গেছে, জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ‘যা দেখলে আনন্দ লাগে’ – এই ধারণাটির চেয়েও বেশি কার্যকর একটি উপায় রয়েছে। আর সেটি হলো নিজের মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে ঘরকে সাজানো।

যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি স্টেট ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক মেরি ই. ডোজিয়ার এই বিষয়ে গবেষণা করেছেন।

তাঁর মতে বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে জিনিসপত্র ধরে রাখার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, অনেক সময় পুরনো স্মৃতি বা অন্যের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে মানুষ জিনিস জমা করে রাখে।

ডোজিয়ারের গবেষণা বলছে, অনেকে হয়তো জিনিসগুলো ফেলে দিতে চান না, কারণ তারা মনে করেন এটি তাদের পরিবারের ঐতিহ্য অথবা অন্য কারো জন্য প্রয়োজনীয়।

কাউকে সাহায্য করার মানসিকতা থেকেও অনেকে জিনিসপত্র আগলে রাখেন। উদাহরণস্বরূপ, একটি পুরনো পোশাক হয়তো আপনার কাছে স্মৃতিচিহ্নস্বরূপ, অথবা আপনি হয়তো মনে করেন পোশাকটি অন্য কারো কাজে লাগতে পারে।

তাহলে, ঘরকে পরিপাটি রাখার সঠিক উপায় কী? ডোজিয়ারের মতে, এর মূল চাবিকাঠি হলো নিজের মূল্যবোধগুলো চিহ্নিত করা।

তিনি কিছু কার্যকরী পরামর্শ দিয়েছেন:

  • নিজের মূল্যবোধগুলো লিখুন: আপনার কাছে পরিবার, ঐতিহ্য, নাকি স্বাস্থ্য—কোন জিনিসগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
  • ঘরের জন্য মূল্যবোধ-অনুযায়ী লক্ষ্য তৈরি করুন: আপনার ঘরকে কীভাবে দেখতে চান, তার একটি ধারণা তৈরি করুন। যেমন, আপনি কি চান আপনার বসার ঘরটি আরও আরামদায়ক হোক, নাকি রান্নাঘরটি আরও বেশি কার্যকরী হোক?
  • মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জিনিস বাছাই করুন: আপনার মূল্যবোধের সঙ্গে যে জিনিসগুলো সঙ্গতিপূর্ণ, সেগুলো রাখুন। যেমন, যদি আপনার কাছে স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়, তবে স্বাস্থ্যকর রান্নার রেসিপির বই রাখাটা যুক্তিযুক্ত।
  • অন্যকে সাহায্য করার মানসিকতা রাখুন: কারো জিনিসপত্র গোছাতে সাহায্য করার সময় তাদের অনুভূতিকে সম্মান করুন। হয়তো আপনার চোখে একটি পুরনো বাক্স অকেজো, কিন্তু যিনি এটি জমা করে রেখেছেন, তাঁর কাছে এর অন্যরকম গুরুত্ব থাকতে পারে।

ডোজিয়ারের গবেষণায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। সেটি হলো, জিনিসপত্র গোছানোর সময় তাড়াহুড়ো না করে ধীরে সুস্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া।

তাড়াহুড়ো করলে অনেক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

ঘরের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখার ক্ষেত্রে, ডোজিয়ারের এই নতুন ধারণা আমাদের পুরোনো ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করে।

এটি শুধু একটি ঘরকে পরিপাটি করার বিষয় নয়, বরং আমাদের জীবনের গুণগত মান উন্নত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *