আতঙ্কে ‘ভয়েস অফ আমেরিকা’: ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে কি নীরব হবে গণতন্ত্রের কণ্ঠ?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের ফলে ভয়েস অফ আমেরিকার (ভিওএ) প্রায় সকল কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। সরকারি এই সংবাদ সংস্থার কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

শুক্রবার রাতে ট্রাম্প ‘ফেডারেল ব্যুরোক্রেসি হ্রাস অব্যাহত রাখা’ বিষয়ক একটি আদেশে স্বাক্ষর করেন, যা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কার্যক্রমকে সীমিত করার নির্দেশ দেয়।

এই সিদ্ধান্তের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া (ইউএসএজিএম) ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার অধীনে ভয়েস অফ আমেরিকা, রেডিও ফ্রি ইউরোপ/এশিয়া এবং রেডিও মার্তির মতো গণমাধ্যমগুলো পরিচালিত হয়। রিপাবলিকানদের অভিযোগ, সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত মিডিয়াগুলো তাদের প্রতিপক্ষদের সম্পর্কে পক্ষপাতদুষ্ট খবর পরিবেশন করে।

হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ ‘নিশ্চিত করবে যে করদাতাদের অর্থ আর কোনো বিপ্লবী প্রচারণার কাজে ব্যবহার করা হবে না’।

শনিবার সকালে, ট্রাম্প কর্তৃক সংস্থার উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত সিনেট প্রার্থী কারি লেক এক্সে (সাবেক টুইটার) কর্মীদের তাদের ই-মেইল পরীক্ষা করতে বলেন। ভয়েস অফ আমেরিকার পরিচালক মাইকেল আব্রামোভিজ এক লিংকডইন পোস্টে লিখেছেন, তার ১,৩০০ জন সাংবাদিক, প্রযোজক এবং সহকারীসহ কার্যত সকল কর্মীকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ৮৩ বছর পর প্রথমবারের মতো ভয়েস অফ আমেরিকাকে নীরব করে দেওয়া হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

ভিওএ ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসিদের প্রচারণার জবাব দিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে এটি সপ্তাহে প্রায় ৩৬০ মিলিয়ন মানুষের কাছে সংবাদ পরিবেশন করে এবং প্রায় ৫০টি ভাষায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিফেন ক্যাপুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত ‘আমেরিকার শত্রুদের জন্য বিশাল উপহার’স্বরূপ।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষ, যারা সঠিক খবরের জন্য আমাদের ওপর নির্ভরশীল, তারা আমেরিকা এবং বিশ্বের সত্য ঘটনা থেকে বঞ্চিত হবে।

সরকারকে ছোট করার এই আদেশের তালিকায় আরও ছিল উড্রো উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলার্স, ইনস্টিটিউট অফ মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরি সার্ভিসেস এবং ইউএস ইন্টারএজেন্সি কাউন্সিল অন হোমলেসনেস।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *