বোলসোনারোর সমর্থনে ব্রাজিলের রাজপথে জনস্রোত, কী ঘটতে যাচ্ছে?

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থনে সম্প্রতি রিও ডি জেনেইরোর কোপাকাবানা সমুদ্র সৈকতে বিশাল এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই সমাবেশে তার কয়েক হাজার সমর্থক যোগ দেন।

বলসোনারোকে বর্তমানে তার উত্তরসূরি, বর্তমান বামপন্থী প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভাকে ক্ষমতাচ্যুত করার চেষ্টার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

সমাবেশে বক্তৃতাকালে বলসোনারো আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইঙ্গিত দেন এবং ২০২৩ সালের ৮ই জানুয়ারীর দাঙ্গায় অভিযুক্তদের ক্ষমা করার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, ওইদিন বলসোনারোর সমর্থকরা দেশটির কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলা চালায়। বলসোনারো তার সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যারা আমাকে পছন্দ করেন না, তাদের আমি জানাতে চাই, বলসোনারোকে ছাড়া নির্বাচন ব্রাজিলের গণতন্ত্রের প্রতি অস্বীকৃতি।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বলসোনারো মূলত যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক উত্থানকে অনুসরণ করতে চাইছেন।

ট্রাম্পের মতোই, বলসোনারোও নিজেকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হিসেবে দাবি করেন। তার অভিযোগ, তাকে ২০২৬ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বাধা দিতেই এসব করা হচ্ছে।

২০২২ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে লুলা দা সিলভার কাছে পরাজিত হওয়ার পর থেকেই বলসোনারোর জনপ্রিয়তা হ্রাস পেতে শুরু করে। এরপর ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তার সমর্থকরা রাজধানী ব্রাসিলিয়ার সরকারি ভবনগুলোতে হামলা চালায়, যা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ঘটনার সঙ্গে মিলে যায়।

প্রসিকিউটররা মনে করেন, এই দাঙ্গা ছিল লুলাকে ক্ষমতাচ্যুত করার একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

বর্তমানে ব্রাজিলের সুপ্রিম কোর্ট বিবেচনা করছে, বলসোনারোর বিরুদ্ধে মামলা চালানোর মতো যথেষ্ট প্রমাণ আছে কিনা।

দोषী সাব্যস্ত হলে তার ৪০ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। বলসোনারোকে “ট্রপিকসের ট্রাম্প” বলেও অভিহিত করা হয়।

তিনি ২০১৮ সালে ব্রাজিলের ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেমে জালিয়াতির ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছিলেন, যার কারণে তাকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত কোনো সরকারি পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে তিনি এই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ট্রাম্পের মতোই রাজনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে আগ্রহী।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক আন্দ্রে রোসা মনে করেন, এই সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য ছিল বলসোনারোর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের কাছে একটি বার্তা পাঠানো এবং ২০২৬ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অভিপ্রায় পুনরায় ব্যক্ত করা।

এদিকে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুলার বয়স এবং স্বাস্থ্য নিয়েও অনেকে উদ্বেগে রয়েছেন। তাছাড়া, মূল্যস্ফীতিও তার জনপ্রিয়তা কমিয়ে দিয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *