স্টারবাকসের গরম চা: ভয়াবহ ঘটনার শিকার, কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ!

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় স্টারবাকসের একটি গরম চা পড়ে মারাত্মকভাবে ঝলসে যাওয়া এক ডেলিভারি চালককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ৫ কোটি মার্কিন ডলার দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির একটি জুরি শুক্রবার এই রায় দেয়।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি মাইকেল গার্সিয়া নামের ওই ডেলিভারি চালক একটি স্টারবাকস থেকে ‘ভেন্টি’ সাইজের ‘মেডিসিন বল’ নামের গরম চা সংগ্রহ করার সময় তা তার শরীরে পড়ে গুরুতরভাবে আহত হন। চা পানের কারণে তার শরীরে স্থায়ী বিকৃতি ঘটেছে এবং অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে।

গার্সিয়ার আইনজীবীরা জানান, ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে একাধিকবার তার ত্বকের গ্রাফটিং করতে হয়েছে। তাদের মতে, গরম চা চামড়ার সংস্পর্শে আসার ফলে তিনি “শারীরিক ও মানসিক” ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

আদালতে গার্সিয়ার আইনজীবীরা জানান, স্টারবাকসের একজন কর্মচারী গরম চা ভালোভাবে ট্রেতে রাখতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

গ্রাহকদের নিরাপত্তার বিষয়ে স্টারবাকসের চরম অবহেলা এবং তাদের দায়িত্ব গ্রহণে অস্বীকৃতির জন্য এই রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

গার্সিয়ার আইনজীবী নিক রওলি

অন্যদিকে, স্টারবাকস কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছে। স্টারবাকস এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমরা জুরির এই রায়ের সঙ্গে একমত নই এবং ক্ষতিপূরণের পরিমাণকে অতিরিক্ত মনে করি।” তারা আরও জানায়, গরম পানীয় পরিবেশনের ক্ষেত্রে তারা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মান বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই ঘটনার আগে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় গরম পানীয় পড়ে গ্রাহক আহত হওয়ার ঘটনায় মামলার সম্মুখীন হতে হয়েছে। নব্বইয়ের দশকে, ম্যাকডোনাল্ডসের কফি কাপের ঢাকনা খুলতে গিয়ে এক নারীর ঝলসে যাওয়ার ঘটনায় আদালত ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রায় ৩০ লক্ষ ডলার প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল। যদিও পরে বিচারক এই পরিমাণ কমিয়ে দেন এবং পরবর্তীতে ৬ লক্ষ ডলারের কম পরিমাণে আপোস রফা হয়।

আরেকটি ঘটনায়, ১৯৯০-এর দশকে আইওয়াতে ম্যাকডোনাল্ডসের কফি কাপ এক শিশুর গায়ে পড়ে যাওয়ার পর আদালত রেস্তোরাঁর পক্ষেই রায় দিয়েছিল।

এই মামলার রায় বাংলাদেশে খাদ্য ও পানীয় পরিবেশনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা মান নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভোক্তাদের অধিকার রক্ষায় এবং গ্রাহক সুরক্ষায় এমন ঘটনাগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *