ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেটের প্রধান রোনেন বারকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। রবিবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, বারকে পদ থেকে সরানোর প্রস্তাব তিনি মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করবেন।
জানা গেছে, নেতানিয়াহু মনে করেন বারকে অপসারণ করা জরুরি। বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন লক্ষ্য অর্জন এবং ভবিষ্যতে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিপর্যয় রোধ করার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
নেতানিয়াহু সম্প্রতি শিন বেট কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে বলেছেন, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পেছনে তাদের গাফিলতি ছিল। ওই হামলায় ১,২০০ জনের বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল।
শিন বেট-এর পক্ষ থেকে অবশ্য ঘটনার অভ্যন্তরীণ তদন্তে তাদের ‘ব্যর্থতা’ স্বীকার করা হয়েছে। তারা তাদের প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দিয়েছে, হামাসকে কাতার থেকে অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছিল, যা ইসরায়েল সরকার সমর্থন করেছিল।
শিন বেট আরও বলেছে, নেতানিয়াহুর বিচার বিভাগীয় সংস্কারের চেষ্টার কারণে ইসরায়েলি সমাজে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছিল, যা হামাসকে হামলার সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করেছে।
অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা ইয়াইর লাপিদ এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “দেড় বছর ধরে বারকে বরখাস্ত করার কোনো কারণ দেখেননি নেতানিয়াহু, কিন্তু কাতার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অর্থ পাঠিয়েছে—এমন তদন্ত শুরু হওয়ার পরই তিনি বারকে দ্রুত সরানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন।
বিরোধী দলনেতা বেনি গান্টজ বারকে সরানোর এই পদক্ষেপকে ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি সরাসরি আঘাত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণে এটি দেশের নিরাপত্তা দুর্বল করবে এবং ইসরায়েলি সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করবে।”
তবে, নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন সরকারের কট্টরপন্থী কয়েকজন সদস্য। অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ বলেছেন, “শিন বেট প্রধানের পদত্যাগ করা উচিত ছিল।
আরেকজন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ইতামার বেন গভিরও বারকে বরখাস্ত করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, বার তার প্রতি এবং নির্বাচিত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে কাজ করেছেন।
জানা গেছে, নেতানিয়াহু হামাসের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেওয়া দল থেকেও বারকে সরিয়ে দিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।