যুক্তরাষ্ট্রে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যে টর্নেডো, দাবানল এবং ধূলিঝড়ের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সোমবার নাগাদ এই ঝড় আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে চলে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে মিসৌরি, কানসাস এবং আলাবামা।
আলাবামার স্থানীয় এক বাসিন্দা সিএনএনকে সেখানকার পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, “আমি ছোটবেলায় যা দেখেছি, তেমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া ঘূর্ণিঝড়ে অন্ততপক্ষে ৮০টি টর্নেডোর খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে কয়েক ডজন নিশ্চিত করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আরকানসাসে দুটি শক্তিশালী ইএফ৪ টর্নেডো আঘাত হেনেছে। এর আগে ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে এই রাজ্যে এক দিনে এতগুলো শক্তিশালী টর্নেডো দেখা যায়নি।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, একটি ইএফ৪ টর্নেডোর বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৭০ মাইল, যা আরকানসাসের লার্কিন শহরের কাছে আঘাত হানে।
এছাড়া, অন্য একটি টর্নেডো ডিয়াজ শহরে আঘাত হানে, যেখানে বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৯০ মাইল পর্যন্ত। ইএফ৪ মাত্রার টর্নেডোগুলোকে ‘মারাত্মক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা ঘরবাড়ি, গাড়ি এবং বড় গাছপালা ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।
আরকানসাসে ঝড়ের কারণে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে। এছাড়া, আলাবামাতেও ঝড়ের তাণ্ডবে তিনজন মারা গেছেন।
রাজ্যের গভর্নর কেই আইভি জানিয়েছেন, রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হচ্ছে।
আলাবামার গভর্নর আরও জানান, “গতকালের খারাপ আবহাওয়ার কারণে আলাবামার অধিকাংশ অঞ্চলে প্রভাব পড়েছে।” তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
ঝড়ের কারণে সৃষ্ট প্রবল বাতাস পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তোলে। এতে শত শত ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পাওয়ারআউটেজ ডট ইউএস নামক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে ৭০০-এর বেশি জায়গায় ঝড়ো বাতাসের খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, দক্ষিণাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চলে যখন ঝড়ের ধ্বংসযজ্ঞের পরিমাণ নিরূপণ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু হয়েছে, তখন দক্ষিণাঞ্চলে দাবানলের ঝুঁকি এখনো কাটেনি।
টেক্সাস, ওকলাহোমা, কানসাস, নিউ মেক্সিকো এবং কলোরাডোর কিছু অংশে এখনো তীব্র দাবানলের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ওকলাহোমাতে ঝড়ের কারণে সৃষ্ট শক্তিশালী বাতাসে কয়েকটি পৃথক কাউন্টিতে দাবানলে পুড়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন লিংকন কাউন্টির এক যুব কুস্তি প্রশিক্ষক অ্যালেন ফার্গুসন।
এই ঘটনায় তার ছেলে গুরুতর আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চলছে। সাধারণ মানুষজন তাদের সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন