অর্থনীতির হাল: ভালো খবরেও দুঃশ্চিন্তা কেন?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির কিছু ইতিবাচক চিত্র দেখা গেলেও, এর পেছনের আসল চিত্রটি বেশ উদ্বেগের। সম্প্রতি সময়ে দেশটির অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে মিশ্র ফল পাওয়া যাচ্ছে।

অন্যদিকে যেমন কমছে বন্ধকী ঋণের সুদের হার, পেট্রোলের দামও রয়েছে স্থিতিশীল, এমনকি মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমেছে। তবে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, এই ভালো খবরগুলোর আড়ালে লুকিয়ে আছে গভীর সংকট এবং অনিশ্চয়তা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি ব্যবসা এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি তৈরি করেছে।

বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধকী ঋণের সুদের হার কমার কারণ হলো, ট্রেজারি বন্ডের ফলন হ্রাস। সাধারণত, অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময়ে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য এই বন্ডের দিকে ঝুঁকে।

ফলে এর চাহিদা বাড়ে এবং ফলন কমে যায়। পেট্রোলের দাম স্থিতিশীল থাকার পেছনে রয়েছে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্যহীনতা, বিশেষ করে চীনে দুর্বল চাহিদার প্রভাব।

এছাড়াও, মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও, ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) নির্ধারিত ২ শতাংশের কাছাকাছি আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। বর্তমানে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ২.৮ শতাংশে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য এই ভালো ফলগুলোর কৃতিত্ব নিচ্ছেন, যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর পেছনের কারণগুলো ভিন্ন।

ট্রাম্পের শুল্কনীতি ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। বিভিন্ন সরকারি সংস্থার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনাও উদ্বেগের কারণ।

সম্প্রতি বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান বিষয়ক একটি জরিপে দেখা গেছে, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে কর্মী ছাঁটাই হয়েছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা অনেকটাই নির্ভর করছে বাণিজ্য নীতির ওপর।

যদি শুল্কনীতিতে পরিবর্তন আসে, তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে। জেপি মরগান অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান কৌশলবিদ ডেভিড কেলির মতে, “যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী।

তবে এই অনিশ্চয়তা তাদের পছন্দ নয়। অনেক ব্যবসায়ী এখন “আলোর দিকে তাকিয়ে থাকা হরিণের” মতো অবস্থায় আছেন।”

বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। তাই, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির এই অস্থিরতা বিশ্বজুড়ে প্রভাব ফেলতে পারে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিকেও প্রভাবিত করতে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতির এই সংকটকালে, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের জন্য পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *