মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আমদানি শুল্কের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দিতে রাজি নন। সম্প্রতি তিনি ঘোষণা করেছেন, আগামী ২রা এপ্রিল থেকে এই দুই পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে।
এমনকি অন্য দেশগুলোও যদি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ায়, তাহলে তারাও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে।
এয়ার ফোর্স ওয়ানে করে হোয়াইট হাউসে ফেরার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ২রা এপ্রিল হবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি ‘মুক্তির দিন’। তিনি বলেন, ‘তারা যা করবে, আমরাও তাই করব—অর্থাৎ, তারা যে শুল্ক আরোপ করবে, আমরাও তাই করব।’
এর সঙ্গে অটোমোবাইল, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। ট্রাম্পের মতে, আগের সরকারগুলো এবং ‘বোকা প্রেসিডেন্টরা’ আমেরিকার সম্পদ নষ্ট করেছে।
তার আমলে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং দেশীয় শিল্পকে চাঙা করতে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর কারণে এরই মধ্যে ‘বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার’ দেশে এসেছে।
উল্লেখ্য, তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি (TSMC), বিশ্বের বৃহত্তম চিপ প্রস্তুতকারক, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে রাজি হয়েছে।
হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প এই চুক্তিকে স্বাগত জানালেও, তাইওয়ানের কিছু মানুষ, এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্টও, এটিকে রাজনৈতিক ও সামরিক সহায়তার বিনিময়ে ‘সুরক্ষা ফি’-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, যার প্রতিক্রিয়া হিসেবে কানাডা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে শুল্কের বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে ট্রাম্প সরাসরি ‘না’ সূচক জবাব দেন।
তবে, এই শুল্ক নীতি বিশ্ব বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও উস্কে দিতে পারে এবং এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে।
এমনটা হলে, দেশটির দুর্বল অর্থনীতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ওয়াল স্ট্রিট ইতোমধ্যে ট্রাম্পের নীতির কারণে মার্কিন অর্থনীতির ওপর পড়তে যাওয়া সম্ভাব্য ক্ষতির বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
গত সপ্তাহে শেয়ার বাজারে দরপতন হয়েছে এবং প্রধান সূচকগুলোও নিম্নমুখী ছিল।
ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বীকার করেছেন যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেশি, তবে তিনি দাবি করেছেন, তার সরকারের কারণে দাম কমেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি যখন দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন ডিমের দাম আকাশছোঁয়া ছিল, এখন তা ৩৫ শতাংশ কমেছে।’ গ্যাস ও জ্বালানির দাম কমার কথাও উল্লেখ করেন তিনি এবং আশা প্রকাশ করেন যে খাদ্য ও অন্যান্য জিনিসের দামও কমবে।
যদিও মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে পাইকারি বাজারে ডিমের দাম কমেছিল, যা মূলত খুচরা বিক্রেতাদের জন্য প্রযোজ্য। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, আসন্ন ইস্টার ও পাসওভারের ছুটির কারণে এপ্রিল মাসে এই দাম আবার বাড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন