করোনাভাইরাস: ব্রিটিশ টেলিভিশন জগৎ-এর অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় কিছু দিক
কোভিড-১৯ অতিমারী শুধু একটি স্বাস্থ্য সংকট ছিল না, এটি বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনযাত্রায় এনেছিল বিরাট পরিবর্তন।
বিনোদন জগৎও এর বাইরে ছিল না। বিশেষ করে টেলিভিশন, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল।
সম্প্রতি, ব্রিটিশ টেলিভিশন জগতে অতিমারীর প্রভাব নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কীভাবে এই ভাইরাস সেখানকার টিভি অনুষ্ঠানগুলোর ধরন পাল্টে দিয়েছে। আসুন, সেই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশের জন্য শিক্ষণীয় কিছু বিষয় জেনে নিই।
লকডাউনের শুরুতে, যখন সব ধরনের শুটিং বন্ধ হয়ে যায়, তখন ব্রিটিশ টিভি চ্যানেলগুলো নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়।
সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানগুলোতেও পরিবর্তন আসে। উপস্থাপক এবং কলাকুশলীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করতে হয়েছে, যা দর্শকদের কাছে ছিল নতুন এক অভিজ্ঞতা।
অনেক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান, যেমন ‘দিস মর্নিং’, তাদের উপস্থাপনা এবং অতিথি আপ্যায়নে পরিবর্তন আনে।
অতিমারীর সময়ে, দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার জন্য টেলিভিশন নতুন নতুন উপায় খুঁজে বের করে। অনেক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান তাদের পুরনো পর্বগুলো পুনঃপ্রচার করতে শুরু করে।
এছাড়া, নতুন কিছু অনুষ্ঠান তৈরি হয়, যেগুলোর শুটিং ছিল তুলনামূলকভাবে সহজ। উদাহরণস্বরূপ, স্বল্প সংখ্যক শিল্পী এবং কলাকুশলী নিয়ে তৈরি হওয়া নাটকগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে।
তবে, শুধু বিনোদন নয়, অতিমারীর বাস্তব চিত্রও টেলিভিশনে উঠে আসে। বিশেষ করে, স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠানগুলোতে কোভিড-১৯ এর ভয়াবহতা এবং প্রতিরোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করা হতো।
অনেক সময়, বিভিন্ন নাটকে এই ভাইরাসের প্রভাব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা দর্শকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করেছে।
ব্রিটিশ টেলিভিশন-এর এই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশের জন্য অনেক কিছু শেখার আছে।
আমাদের দেশেও, লকডাউনের সময় টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। বিদেশি অনুষ্ঠানের সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, দেশীয় কনটেন্টের ওপর চাপ বাড়ে।
এই সময়, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যদি দ্রুত পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজেদের মানিয়ে নিতে পারত, তাহলে দর্শকদের আরও বেশি বিনোদন দেওয়া সম্ভব হতো।
ভবিষ্যতে, যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় টেলিভিশনকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের প্রসারের ফলে, দর্শকদের রুচি এবং চাহিদার পরিবর্তন হচ্ছে। তাই, টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে নতুন নতুন ধারণা নিয়ে আসতে হবে, যা দর্শকদের আকৃষ্ট করবে।
একইসঙ্গে, স্বাস্থ্যবিধি এবং সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে, অনুষ্ঠান নির্মাণ করতে হবে।
ব্রিটিশ টেলিভিশনের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা দেখতে পাই, কঠিন পরিস্থিতিতেও টিকে থাকার এবং দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার অদম্য ক্ষমতা রয়েছে টেলিভিশনের।
বাংলাদেশের টেলিভিশন জগৎও এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে, দর্শকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান উপহার দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান