মা-বাবার স্মৃতি: সেনাদের সম্মান জানাতে কুয়েতে অ্যারন জোন্স!

আর্টেরন জোন্স: মায়ের স্মৃতি বিজড়িত কুয়েতে, সৈন্যদের প্রতি সম্মান।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় আর্টেরন জোন্স সম্প্রতি কুয়েতে একটি বিশেষ সফরে গিয়েছিলেন। এই সফরটি ছিল ইউনাইটেড সার্ভিসেস অর্গানাইজেশন (ইউএসও)-এর উদ্যোগে আয়োজিত, যেখানে তিনি সৈন্যদের সাথে সময় কাটান এবং তাদের প্রতি সম্মান জানান।

জোন্সের মা এক সময় কুয়েতের একটি সামরিক ঘাঁটিতে কর্মরত ছিলেন।

ছোটবেলায় জোন্স প্রায়ই তার বাবা-মাকে সামরিক দায়িত্ব পালনের জন্য দূরে যেতে দেখেছেন। তার মা, ভার্গেস, ২০০৩ সালে যখন কুয়েতে যান, তখন আর্টেরন ছিলেন ছোট। সেই সময় প্রযুক্তি এত উন্নত ছিল না, তাই মায়ের সাথে নিয়মিত কথা বলা বা দেখা করার সুযোগ ছিল খুবই সীমিত। চিঠি-পত্রের মাধ্যমেই চলতো তাদের মধ্যে যোগাযোগ।

মায়ের অনুপস্থিতি সবসময় তাকে অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখতো, কিন্তু তিনি জানতেন মা অবশ্যই ফিরে আসবেন।

কুয়েতে থাকাকালীন সময়ে আর্টেরন তার মায়ের কর্মস্থল ক্যাম্প আরিফজানে যান। সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি তার মাকে ভিডিও কল করেন। এই মুহূর্তটি ছিল তার জন্য “পূর্ণতার” একটি অনুভূতি।

তিনি মাকে বলেন, “আমি এখন এখানে, যেখানে তুমি ছিলে।” এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন, যেন পুরো বিষয়টি নতুন করে অনুভব করা।

জোন্সের এই কুয়েত সফরটি ছিল ন্যাশনাল ফুটবল লীগ (এনএফএল)-এর ‘স্যালুট টু সার্ভিস’ প্রকল্পের অংশ। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সৈন্যদের প্রতি সম্মান জানানো হয়।

জোন্সের সঙ্গে ছিলেন অ্যারিজোনা কার্ডিনালসের খেলোয়াড় ইলাইজা হিগিন্সও। জোন্সের মতে, এই সফর তাকে সৈন্যদের আত্মত্যাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর এবং তার শৈশবের স্মৃতিগুলো নতুন করে অনুভব করার সুযোগ করে দিয়েছে।

আর্টেরনের বেড়ে ওঠা ছিল কিছুটা ভিন্ন। কারণ তার বাবা-মা দুজনেই ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্য। তাদের চাকরির সুবাদে জার্মানি ও টেক্সাসের বিভিন্ন ঘাঁটিতে থাকতে হয়েছে তাকে। এই ঘন ঘন স্থানান্তরের কারণে তিনি দ্রুত পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে শিখেছিলেন, যা তার ফুটবল ক্যারিয়ারে অনেক সাহায্য করেছে।

জোন্সের বাবা-মা দুজনেই দীর্ঘকাল সামরিক বাহিনীতে কাজ করেছেন। তার বাবা আলভিন জোন্স সিনিয়র, ২০২১ সালে মারা যান। জোন্স তার চরিত্র গঠনে পরিবারের এই সামরিক আবহাওয়ার কথা উল্লেখ করেন।

যদিও তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেননি, তবে সৈন্যদের ত্যাগ ও পরিবারের থেকে দূরে থাকার কষ্ট সম্পর্কে তিনি ভালোভাবেই অবগত।

টেক্সাসের ফোর্ট ব্লিসে কাটানো শৈশবের দিনগুলোতে তিনি অনেক বন্ধু তৈরি করেছিলেন, যারা পরবর্তীতে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।

কুয়েত সফরে তাদের কয়েকজনের সাথে আবার দেখা হয় তার। সেখানকার সৈন্যদের সাথে সময় কাটানো, তাদের প্রশিক্ষণ দেখা এবং ফ্ল্যাগ ফুটবল খেলার অভিজ্ঞতা ছিল অসাধারণ।

এমনকি তিনি তাদের সাথে ‘ম্যাডেন’ও খেলেছেন, যেখানে তিনি বেশ কয়েকবার হেরেছেন!

জোন্সের মতে, এই সফরটি তার জীবন বদলে দিয়েছে। এটি তাকে তার অতীতের দিনগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে, যা তাকে জীবনের যাত্রাপথে পাওয়া অভিজ্ঞতাগুলোর জন্য কৃতজ্ঞ করে তোলে।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *