আব্রেরো গার্সিয়ার পক্ষে ডেমোক্রেটদের লড়াই: ভোটারদের মন জয় হবে তো?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন সালভাদরীয় নাগরিককে ফেরত পাঠানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডেমোক্রেটদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। কিলার অ্যাব্রেগো গার্সিয়া নামের ওই ব্যক্তিকে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভুল করে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়।

ডেমোক্রেটরা বলছেন, গার্সিয়ার প্রতি দেশটির সরকারের এমন আচরণ তার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। তবে এই ইস্যুতে দলের অবস্থান নিয়ে অনেকে দ্বিধাবিভক্ত।

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ডেমোক্রেটরা সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কিভাবে একটি শক্তিশালী বার্তা দেবেন, তা নিয়ে যখন ভাবছেন, ঠিক তখনই এই ঘটনা সামনে আসে। দলটির কিছু সদস্য মনে করেন, গার্সিয়ার ঘটনায় মনোযোগ দিলে ভোটারদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে।

তাদের মতে, এর ফলে অভিবাসন ইস্যুটি সামনে আসবে, যেখানে ট্রাম্পের অবস্থান তুলনামূলকভাবে ভালো।

অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাইছে। তারা ডেমোক্রেটদের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলছেন, গার্সিয়ার প্রতি সমর্থন জানানোর মাধ্যমে তারা আসলে অভিবাসীদের বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, যা আমেরিকান নাগরিকদের স্বার্থের পরিপন্থী।

জানা গেছে, গার্সিয়াকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশ ছিল। কিন্তু প্রশাসন সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে।

এরপরেই ডেমোক্রেটরা এর প্রতিবাদে সোচ্চার হন। তারা বলছেন, একজন ব্যক্তির অধিকার রক্ষা করা সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।

মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলোনসহ কয়েকজন ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতা গার্সিয়ার সঙ্গে দেখা করতে এল সালভাদরে যান এবং তার মুক্তির দাবি জানান। তারা বলছেন, এই ইস্যুতে তাদের লড়াই কেবল একটি ব্যক্তির জন্য নয়, বরং এটি সবার সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার বিষয়।

তবে কিছু ডেমোক্রেট মনে করেন, এই ইস্যুটির কারণে ভোটারদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। তাদের আশঙ্কা, এর ফলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং অভিবাসন বিতর্কে ট্রাম্প সুবিধা পেতে পারেন।

তারা মনে করেন, গার্সিয়ার ঘটনা আলোচনার মূল বিষয় হলে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আলোচনা থেকে দূরে চলে যেতে পারে।

অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা গার্সিয়ার অতীতের কিছু অভিযোগ সামনে এনেছেন। এর মধ্যে রয়েছে গার্সিয়ার বিরুদ্ধে তার স্ত্রীর করা পারিবারিক সহিংসতার অভিযোগ এবং এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সঙ্গে তার জড়িত থাকার গুঞ্জন।

যদিও গার্সিয়ার আইনজীবী ও স্ত্রী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ডেমোক্রেটদের জন্য এই ইস্যুটি বেশ জটিল। কারণ একদিকে যেমন তারা আইনের শাসনের পক্ষে কথা বলছেন, তেমনি এই ঘটনা ভোটারদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, ডেমোক্রেটরা কিভাবে তাদের বার্তা দেবেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *