শিরোনাম: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানব পাচারের অভিযোগে এক ব্যক্তির বিচার, দুর্বল প্রমাণে উঠছে প্রশ্ন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ এনেছে, কিন্তু সেই মামলার প্রমাণগুলো নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। ক ইলমার অ্যাব্রেগো গার্সিয়া নামের ওই ব্যক্তিকে প্রথমে ভুল করে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। পরে তাকে আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তার বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, গার্সিয়া টেক্সাস থেকে অন্য অনথিভুক্ত অভিবাসীদের একটি এসইউভিতে করে মেরিল্যান্ডে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে, বিচার বিভাগের পেশ করা প্রমাণগুলো এতটাই দুর্বল যে, টেনেসির একজন ফেডারেল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক এই ব্যক্তিকে বিচারের আগে আটক রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
২০২২ সালে, একটি ট্রাফিক স্টপে গার্সিয়ার এসইউভি’র সন্ধান পাওয়া যায়। সেই গাড়িতে থাকা অন্য নয়জন ব্যক্তির কাছে কোনো পরিচয়পত্র বা লাগেজ ছিল না। প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেছেন, গার্সিয়া মানব পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারা আদালতে একটি সাক্ষীর জবানবন্দী পেশ করেন, যিনি জানিয়েছিলেন এসইউভিতে থাকা এক কিশোরের সিটবেল্ট বাঁধা ছিল না।
তবে, গার্সিয়ার আইনজীবীরা এই অভিযোগের দুর্বলতা তুলে ধরেন। তাদের মতে, প্রসিকিউশন পক্ষের প্রধান সাক্ষী এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তথ্য সরবরাহকারীরা নির্ভরযোগ্য নন। তাদের নিজেদের আইনি সমস্যা রয়েছে এবং এই মামলায় সুবিধা পাওয়ার জন্য তারা মিথ্যা তথ্য দিতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, জানা গেছে যে সাক্ষীদের একজন একাধিকবার অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসেছেন।
আদালতে শুনানিতে, গার্সিয়ার আইনজীবীরা প্রসিকিউটরদের পেশ করা সাক্ষ্য-প্রমাণের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিশেষ করে, সাক্ষীদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগের ভিত্তি কতটা মজবুত, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। আইনজীবীরা যুক্তি দেখান, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য মিথ্যা তথ্য দিতে পারেন।
এই মামলার প্রেক্ষাপটে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও অনেকে খুঁজে পাচ্ছেন। সমালোচকরা বলছেন, অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে কঠোর অবস্থান দেখানোর জন্য এই মামলাটিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। মামলার দুর্বলতা সত্ত্বেও, কর্তৃপক্ষ গার্সিয়াকে জনসম্মুখে ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে।
এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দুর্বলতা এবং অভিবাসন সংক্রান্ত জটিলতাগুলোকেই তুলে ধরে। একইসঙ্গে, এটি প্রশ্ন তোলে যে কীভাবে একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণগুলো যাচাই করা হয় এবং রাজনৈতিক প্রভাব এক্ষেত্রে কতটা কাজ করে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন