ফিলিস্তিনি পরিচালকের উপর হামলা: অ্যাকাডেমির নীরবতা, অবশেষে ক্ষমা!

অস্কার জয়ী ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতাকে সমর্থন না করায় ক্ষমা চাইল অ্যাকাডেমি।

চলতি বছর অস্কার জয়ী ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র নির্মাতা হামদান বাল্লালকে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও সৈন্যদের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনার পর সমর্থন না জানানোয় ক্ষমা চেয়েছে অ্যাকাডেমি অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস। প্রায় ৭০০ ভোট প্রদানকারী সদস্য, যাদের মধ্যে খ্যাতি সম্পন্ন অভিনেতা-অভিনেত্রীও ছিলেন, একটি চিঠিতে বাল্লাল ও তার চলচ্চিত্রের প্রতি সরাসরি সমর্থন না জানানোর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

“নো আদার ল্যান্ড” নামক তথ্যচিত্রের পরিচালক হামদান বাল্লাল, যিনি সম্প্রতি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন, পশ্চিম তীরের সুসিয়া গ্রামে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও সৈন্যদের একটি দল কতৃক আক্রান্ত হন। মাথায় আঘাত নিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায়, হাতকড়া পরানো ও চোখ বাঁধা অবস্থায় বাল্লালকে প্রথমে একটি সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে এক রাত আটক রাখার পরদিন মুক্তি দেওয়া হয়।

তার নির্মিত তথ্যচিত্রে পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিদের তাদের গ্রাম ধ্বংস করার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

হামদান বাল্লাল নিজেই বলেছিলেন, “এটা ছিল আমাদের সিনেমার প্রতিশোধ।”

বিষয়টি নিয়ে অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে প্রথমে দেওয়া বিবৃতিতে বাল্লালের নাম উল্লেখ করা হয়নি। পরে, অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে দেওয়া নতুন বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানানো হয় এবং বাল্লালসহ সকল শিল্পীর প্রতি সমর্থন জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরাMr. বাল্লাল এবং সকল শিল্পীর কাছে ক্ষমা চাইছি, যারা আমাদের আগের বিবৃতিতে সমর্থন পাননি। আমরা পরিষ্কার করতে চাই যে, অ্যাকাডেমি বিশ্বের কোথাও এ ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানায়।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা কোনো পরিস্থিতিতেই বাকস্বাধীনতাকে দমন করা সমর্থন করি না। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে একটি চলচ্চিত্রকে পুরস্কৃত করে কয়েক সপ্তাহ পরেই তার নির্মাতাদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়াটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

চিঠিতে স্বাক্ষর করা খ্যাতিমান অভিনেতাদের মধ্যে ছিলেন মার্ক রুফালো, অলিভিয়া কোলম্যান, এমা থম্পসন, রিচার্ড গিয়ার, সুসান সারান্ডন, জোয়াকিন ফিনিক্স এবং পেনেলোপে ক্রুজ।

গত ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজা যুদ্ধের শুরু থেকে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও সৈন্যদের দ্বারা ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী ও সেনাদের হামলায় অন্তত ৮৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৭৭ জন শিশু।

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক সমন্বয় অফিসের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার ১,৮৬০টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *