মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটদের অনলাইন তহবিল সংগ্রহের প্ল্যাটফর্ম ‘অ্যাক্টব্লু’ (ActBlue) নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই প্ল্যাটফর্মটির বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিলেও, বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে চলেছে তারা।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে অ্যাক্টব্লু।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ট্রাম্পের নির্দেশে অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে এর মাধ্যমে ডেমোক্রেটদের প্রচারণায় বাধা দেওয়া হতে পারে।
তবে, অ্যাক্টব্লু-র সংগ্রহ করা অর্থের পরিমাণ সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছে।
এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে তারা ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ৩৬ শতাংশ বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে।
শুধু তাই নয়, গত চার বছরে এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনুদান দেওয়া ব্যক্তির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ডেমোক্রেটদের এই সাফল্যের মূল কারণ হলো অনলাইন প্ল্যাটফর্মের সহজলভ্যতা এবং সমর্থকদের সক্রিয়তা।
অ্যাক্টব্লু ব্যবহারকারীদের জন্য তাদের ব্যক্তিগত তথ্য ও পেমেন্ট ডিটেইলস সেভ করে রাখার সুবিধা রয়েছে, যার ফলে খুব সহজেই অনুদান দেওয়া সম্ভব হয়।
২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত এই প্ল্যাটফর্মটি ১৭ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে।
চলতি ২০২৪ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় শুধু অ্যাক্টব্লু-ই সংগ্রহ করেছে প্রায় ৩৮০ কোটি ডলার।
যেখানে রিপাবলিকানদের প্ল্যাটফর্ম ‘উইনরেড’ (WinRed) সংগ্রহ করেছে ১৭০ কোটি ডলারের মতো।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান পার্টি এখনো পর্যন্ত ডেমোক্রেটদের মতো অনলাইন তহবিল সংগ্রহে তেমন সুবিধা করতে পারেনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক এরিক উইলসন মনে করেন, এর কারণ হলো ডেমোক্রেটদের সমর্থক মূলত উচ্চশিক্ষিত এবং বেশি আয় করেন এমন শ্রেণির মধ্যে বেশি।
অ্যাক্টব্লু-র দীর্ঘদিনের সুনামও এর সাফল্যের একটি বড় কারণ।
তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের ফলে ডেমোক্রেটদের মধ্যে বিকল্প প্ল্যাটফর্ম তৈরির প্রয়োজনীয়তাও দেখা দিয়েছে।
‘হায়ার গ্রাউন্ড ল্যাবস’-এর প্রতিষ্ঠাতা বেটসি হুভারের মতে, অ্যাক্টব্লু ডেমোক্রেটদের জন্য একটি “ভালো” একচেটিয়া প্ল্যাটফর্ম ছিল।
যদিও তিনি এটাও মনে করেন যে, একটিমাত্র প্ল্যাটফর্মের উপর নির্ভর করাটা ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
এরই মধ্যে ‘গুডচেঞ্জ’ (GoodChange) ও ‘ওথ’ (Oath) এর মতো কিছু নতুন প্ল্যাটফর্ম আত্মপ্রকাশ করেছে।
নর্থ ডাকোটা ডেমোক্রেটিক পার্টির নির্বাহী পরিচালক চেরিল বিলার জানান, তারা ইতোমধ্যে গুডচেঞ্জ ব্যবহার করা শুরু করেছেন, কারণ এটি অনুদানের ক্ষেত্রে নতুন কিছু সুবিধা নিয়ে এসেছে।
এদিকে, অ্যাক্টব্লুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত এখনো চলছে।
তদন্তকারীরা অভিযোগ করছেন, অবৈধভাবে অন্য কারো নামে অনুদান নেওয়া হয়েছে এবং বিদেশি উৎস থেকে অর্থ এসেছে।
যদিও অ্যাক্টব্লু কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন