আদিদাসের কেনাবেচায় বিরাট পতন! কারণ জানলে চমকে উঠবেন

বিশ্বজুড়ে খেলাধুলার সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাসের (Adidas) উত্তর আমেরিকার বাজারে বিক্রি কমেছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, জনপ্রিয় ‘ইজি’ (Yeezy) স্নিকার্স লাইনের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং মার্কিন শুল্কের প্রভাব।

তবে বিশ্বজুড়ে তাদের ব্যবসা এখনো ভালো অবস্থানে রয়েছে।

কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (CEO) বিয়র্ন গুলডেন (Bjorn Gulden) জানিয়েছেন, গত তৃতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিকভাবে অ্যাডিডাসের আয় বেড়েছে ৩ শতাংশ, যা প্রায় ৬.৬৩ বিলিয়ন ইউরো (বর্তমান বিনিময় হারে প্রায় ৮০০ বিলিয়ন বাংলাদেশি টাকা)। যদিও উত্তর আমেরিকাতে বিক্রি ৫ শতাংশ কমেছে।

এর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, ২০১৯ সালে র‍্যাপার কানইয়ে ওয়েস্টের (Kanye West) সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর ‘ইজি’ জুতা তৈরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কানইয়ে ওয়েস্টের ইহুদি বিদ্বেষী মন্তব্যের কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অ্যাডিডাস।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ‘ইজি’ লাইনের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোম্পানির বিক্রি কমে গিয়েছিল। এমনকি ২০২৩ সালে তাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

যদিও তারা এখনো পর্যন্ত পুরনো ‘ইজি’ জুতা বিক্রি করছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এই জুতা বিক্রিও বন্ধ হয়ে যাবে।

তবে, ‘ইজি’ বাদে অন্যান্য পণ্য বিক্রি করে উত্তর আমেরিকায় ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে অ্যাডিডাস। ইউরোপ ও এশিয়ার তুলনায় এটি কিছুটা কম হলেও, কোম্পানিটির সামগ্রিক বিক্রি এখনো ঊর্ধ্বমুখী।

বিখ্যাত এই ব্র্যান্ডের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, শক্তিশালী ইউরোর কারণে তাদের বিক্রি প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ইউরো কমেছে।

এর কারণ হলো, ডলারে অর্জিত আয়কে ইউরোতে রূপান্তর করলে তা কমে যাচ্ছে।

অন্যদিকে, মার্কিন শুল্কের কারণে অতিরিক্ত খরচ হলেও, তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে অ্যাডিডাস। তারা তাদের বার্ষিক মুনাফার পূর্বাভাসও বাড়িয়েছে।

তাদের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ‘সান্তা’ (Samba) স্নিকার্সের দামও বাড়ানো হয়েছে। আগে এটির দাম ছিল ৯০ ডলারের বেশি, যা এখন ১০০ ডলার থেকে শুরু হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘সান্তা’ এবং ‘গ্যাজেল’ (Gazelle)-এর মতো জনপ্রিয় জুতাগুলোর চাহিদা এখনো রয়েছে। তবে তারা নতুন বাজারের দিকেও নজর রাখছে।

অ্যাডিডাসের দৌড় বিভাগের (Running Segment) বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা আগের প্রান্তিকের ২৫ শতাংশ থেকে বর্তমানে ৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

খেলাধুলার সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলোও মার্কিন শুল্কের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে তাদের সরবরাহ শৃঙ্খলে পরিবর্তন আনছে এবং পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।

অ্যাডিডাসের শেয়ারের দামও জানুয়ারি থেকে ২২ শতাংশ কমেছে।

এই পরিস্থিতিতে, অ্যাডিডাস তাদের ব্যবসার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করছে। একইসঙ্গে তারা তাদের পণ্যের গুণগত মান এবং গ্রাহক সন্তুষ্টির দিকেও জোর দিচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *