অ্যাডোলসেন্স: সাফল্যের গোপন রহস্য, যা আগে শোনেননি!

নেটফ্লিক্সের জনপ্রিয় সিরিজ ‘অ্যাডোলসেন্স’ : এক দৃশ্যের চলচ্চিত্র নির্মাণের পেছনের গল্প বর্তমানে নেটফ্লিক্সে সাড়া জাগানো একটি সিরিজ হলো ‘অ্যাডোলসেন্স’। শুধু দর্শকপ্রিয়তাই নয়, সিনেমাটোগ্রাফির দিক থেকেও এটি বেশ প্রশংসিত হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টেও এই সিরিজটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বাধিক স্ট্রিমিং হওয়া সিনেমাগুলোর মধ্যে এটি এখন শীর্ষে রয়েছে।

প্রত্যেকটি এক ঘণ্টার পর্ব তৈরি হয়েছে একটানা দৃশ্যায়নের মাধ্যমে, যা এর কারিগরদের জন্য ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং। কিভাবে এলো এই ধারণা? আসুন, জেনে নিই এর পেছনের কিছু অজানা কথা।

এই সিরিজের পরিচালক ফিলিপ বারানটিনি’র মতে, সবকিছু শুরু হয়েছিল বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসার হাত ধরে। এর আগে তিনি ‘বয়েলিং পয়েন্ট’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন, যেখানে স্টিফেন গ্রাহাম ছিলেন প্রধান চরিত্রে।

মূলত, বন্ধুদের উৎসাহের ফলেই তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে আসেন। স্টিফেন গ্রাহাম জানান, ফিলিপ তাকে যখন তার প্রথম ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন, তখন তিনি রাজি হননি।

বরং, ফিলিপকে ভালো কাজ দেখানোর জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। ‘অ্যাডোলসেন্স’-এর প্রধান আকর্ষণ এর সিনেমাটোগ্রাফি।

প্রতিটি দৃশ্য ধারণের জন্য নির্মাতাদের অনেক পরিকল্পনা করতে হয়েছে। বিশেষ করে, সিরিজের তরুণ অভিনেতা ওয়েন কুপারকে নিয়ে তাদের ছিল বাড়তি সতর্কতা।

নির্মাতারা সবসময় নিশ্চিত করেছেন, সে যেন কোনো মানসিক চাপে না থাকে। এমনকি, দৃশ্যধারণের সময় সেটের মধ্যে একজন মনোবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সবসময় উপস্থিত ছিলেন।

সিরিজটির দ্বিতীয় পর্বের একটি দৃশ্যে ক্যামেরার কারসাজি দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। যেখানে দেখা যায়, ক্যামেরা আকাশে উড়ে যাচ্ছে এবং স্টিফেন গ্রাহামের পাশে এসে থামছে।

এই দৃশ্য ধারণের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে পরিচালক জানান, দৃশ্যে যখন একজন অভিনেতা গাড়ি নিয়ে চলে যান, তখন ক্যামেরাম্যান ক্যামেরার সঙ্গে একটি ড্রোন যুক্ত করেন।

এরপর ড্রোনটি শহরের উপর দিয়ে ওড়ে এবং স্টিফেন গ্রাহামের দিকে এগিয়ে আসে। তবে, এই দৃশ্য ধারণ করা খুব সহজ ছিল না।

পরিচালকের পরিকল্পনা ছিল, ড্রোনটি শুধু উড়ে যাবে। কিন্তু শুটিংয়ের মাঝামাঝি সময়ে নেটফ্লিক্সের একজন নির্বাহী টবি বেন্টলি নতুন একটি আইডিয়া দেন।

তিনি জানান, দৃশ্যের শেষে স্টিফেন গ্রাহামকে দেখা গেলে ভালো হয়। এরপর শুরু হয় নতুন পরিকল্পনা।

একদিন শুটিংয়ের সময় বাতাসের বেগ বেশি থাকায় ড্রোন ব্যবহার করা যায়নি। পরের দিন সকালে ড্রোন চললেও সেটি ভারসাম্য রাখতে ব্যর্থ হয়।

অবশেষে, নির্মাতারা অন্য একটি উপায় বের করেন এবং দৃশ্যটি ধারণ করতে সক্ষম হন। এই সিরিজের শুটিং লোকেশন নির্বাচন করাও ছিল বেশ কঠিন।

প্রথম পর্বের বেশিরভাগ দৃশ্য একটি পুলিশ স্টেশনে ধারণ করা হলেও, বাড়ির ভেতরের কিছু দৃশ্য ছিল বাস্তব। নির্মাতাদের স্টুডিও থেকে অল্প দূরে, এমন একটি বাড়ি খুঁজে বের করতে হয়েছিল।

অভিনেতাদের কষ্টও ছিল অনেক। বিশেষ করে, সিরিজের তৃতীয় পর্বে ওয়েন কুপারের কণ্ঠ নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। একটানা চিৎকার ও অভিনয়ের কারণে তার গলায় বেশ চাপ পড়েছিল।

‘অ্যাডোলসেন্স’ সিরিজটি শুধু একটি বিনোদনমূলক কাজ নয়, বরং এটি চলচ্চিত্র নির্মাণের এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত। যারা সিনেমা তৈরি করতে চান, তাদের জন্য এই সিরিজটি একটি শিক্ষণীয় বিষয় হতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *