শিরোনাম: খেলাধুলা কি তরুণ সমাজের বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে? মনোবিদের বিশ্লেষণ
সাম্প্রতিক সময়ে অনলাইনে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সহিংসতার প্রবণতা বাড়ছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই ভুল পথে চালিত হচ্ছে, বিশেষ করে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার শিকার হয়ে তারা নিজেদের একঘরে করে ফেলছে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে প্রচারিত একটি টেলিভিশন সিরিজে (টিভি সিরিজ) এই বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। ‘অ্যাডোলসেন্স’ নামের এই সিরিজে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের গল্প বলা হয়েছে, যে অনলাইনে চরমপন্থী ধারণায় আকৃষ্ট হয় এবং পরে সহিংস ঘটনায় জড়িয়ে পরে।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে, এবং বিশেষজ্ঞরা এর কারণ অনুসন্ধান করছেন।
এই প্রেক্ষাপটে, সাবেক বাস্কেটবল খেলোয়াড় ও মনোবিজ্ঞানী জন অ্যামেচি মনে করেন, খেলাধুলা এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
তাঁর মতে, খেলাধুলা শুধু শারীরিক সুস্থতাই দেয় না, বরং তরুণদের মানসিক বিকাশেও সাহায্য করতে পারে। অ্যামেচি জানান, খেলাধুলার মাধ্যমে একটি ইতিবাচক সমাজ তৈরি করা সম্ভব, যেখানে পারস্পরিক সহযোগিতা, সহমর্মিতা এবং আবেগের প্রকাশকে উৎসাহিত করা হয়।
তাঁর মতে, খেলাধুলা যদি সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায়, তবে এটি তরুণদের মধ্যে একতা তৈরি করতে পারে এবং তাদের খারাপ প্রভাব থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করতে পারে।
অ্যামেচির মতে, খেলাধুলার পরিবেশ যদি বন্ধুত্বপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়, তাহলে তরুণরা সেখানে নিজেদের আরও বেশি নিরাপদ মনে করবে।
খেলাধুলা দলগতভাবে কাজ করার সুযোগ দেয়, যা তাদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বাড়ায়। যখন কোনো খেলোয়াড় আঘাত পায়, তখন দলের অন্য সদস্যরা তাকে সাহায্য করে; খেলার ফল ভালো না হলেও একে অপরের প্রতি সহানুভূতি দেখায়।
এমন পরিবেশে বেড়ে উঠলে তরুণদের মধ্যে মানসিক দৃঢ়তা তৈরি হয় এবং তারা সমাজের খারাপ প্রভাব থেকে দূরে থাকতে পারে।
অন্যদিকে, অ্যামেচি খেলাধুলার নেতিবাচক দিকগুলো নিয়েও কথা বলেছেন।
অনেক সময় দেখা যায়, খেলাধুলায় কিছু মানুষের একচেটিয়া আধিপত্য থাকে, যেখানে অন্যদের কোণঠাসা করে রাখা হয়। যারা শারীরিক দিক থেকে দুর্বল বা বহির্মুখী নয়, তাদের প্রায়ই উপহাস করা হয়।
এমন পরিবেশে বেড়ে উঠলে তরুণদের মধ্যে হীনমন্যতা তৈরি হতে পারে, যা তাদের সমাজের প্রতি বিদ্বেষী করে তোলে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খেলাধুলাকে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
খেলাধুলার প্রশিক্ষকদের আরও বেশি সংবেদনশীল ও দক্ষ হতে হবে। তাঁদের শুধু খেলা শেখানোই নয়, বরং তরুণদের মানসিক চাহিদাগুলোও বুঝতে পারতে হবে।
খেলাধুলা যদি সঠিক পথে পরিচালিত হয়, তবে এটি তরুণদের খারাপ প্রভাব থেকে দূরে রাখতে এবং তাদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে সাহায্য করতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন