ইরান থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা আফগান শরণার্থীদের বহনকারী একটি বাসের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অন্তত ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (গতকাল) আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর হেরাটের একটি মহাসড়কে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও অনেক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বাসটি ইরান সীমান্ত সংলগ্ন ইসলাম কালা শহর থেকে কাবুলের দিকে যাচ্ছিল।
আফগান সরকারের মুখপাত্র মুফতি মোহাম্মদ ইউসুফ সাঈদী সিএনএনকে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৭৬ জন নিহত হয়েছেন।
হেরাটের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের পরিচালক আহমাদুল্লাহ মুত্তাকীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন শিশু রয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়, তবে ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত গতির কারণে এটি ঘটেছে।
বাসের ধ্বংসস্তূপ থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে, ইরান থেকে আফগান শরণার্থীদের বিতাড়ন প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়েছে।
তেহরান সরকার অবৈধভাবে বসবাসকারী কয়েক মিলিয়ন আফগান নাগরিককে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির এমন সিদ্ধান্তের পেছনে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে, যা এখনো প্রমাণ হয়নি।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের পর, গত জুন মাস থেকে ১৬ দিনের মধ্যে পাঁচ লাখেরও বেশি আফগানকে ইরান থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এটি সম্ভবত দশকের সবচেয়ে বড় জোরপূর্বক জনসংখ্যা স্থানান্তরের ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি।
আফগান শরণার্থীদের বিতাড়ন এবং তাদের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনেক আফগান দীর্ঘদিন ধরে ইরানে বসবাস করছিলেন, তাদের অনেকের কাছে বৈধ কাগজপত্র ছিল না।
আফগানিস্তান ও ইরানের মধ্যে সীমান্ত রয়েছে এবং এই দুই দেশের মধ্যে অভিবাসনের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।
এই অঞ্চলের অস্থির পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে অনেক আফগান কাজের সন্ধানে ইরানে পাড়ি জমায়।
বর্তমানে, এই দুর্ঘটনার পর, বাস্তুচ্যুত আফগানদের জন্য মানবিক সংকট আরও গভীর হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন