আফ্রিকা মহাদেশ ধীরে ধীরে যেন খন্ড খন্ড হয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এই মহাদেশের পূর্বাংশে ফাটল ধরার কারণে কয়েক মিলিয়ন বছর পর নতুন একটি মহাসাগরের সৃষ্টি হতে পারে।
ভূতাত্ত্বিক প্লেটের স্থানান্তরের ফলে ইথিওপিয়া, জিবুতি ও ইরিত্রিয়া—এই তিনটি দেশ আফ্রিকার মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে যেতে পারে। এর ফলে ভারত মহাসাগরের জলরাশি ওই অঞ্চলে প্রবেশ করে নতুন একটি জলভাগ তৈরি করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে এক থেকে দুই কোটি বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পূর্ব আফ্রিকান রিফ্ট সিস্টেমে এই ঘটনাটি ঘটছে।
এখানে সোমালিয়ান প্লেট, নুবিয়ান প্লেট থেকে এবং উত্তরে আরবীয় প্লেট থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এর মূল কারণ হলো, পৃথিবীর অভ্যন্তরের গভীর থেকে আসা ম্যাগমা।
ভূ-বিজ্ঞানীদের মতে, এই প্লেটগুলো প্রতি বছর ০.৩ ইঞ্চি পর্যন্ত একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। প্লেট টেকটোনিক্সের কারণে পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের ভৌগোলিক পরিবর্তন হয়।
প্লেটগুলো আলাদা হওয়ার কারণে আগ্নেয়গিরি, গিজার এবং উপত্যকার মতো ভূমিরূপ তৈরি হয়। অন্যদিকে, প্লেটগুলো একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খেলে পাহাড় তৈরি হয়, যেমনটা হিমালয় পর্বতমালায় দেখা যায়।
ক্যালিফোর্নিয়ার সান আন্দ্রিয়াস ফল্টও এর একটি উদাহরণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পূর্ব আফ্রিকার এই অঞ্চলে প্লেট টেকটোনিক্সের কারণে ভূমিকম্প এবং অগ্ন্যুৎপাতের মতো ঘটনাগুলো বেড়ে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, সর্বশেষ নতুন একটি মহাসাগরের স্বীকৃতি পাওয়া গিয়েছিল ২০২১ সালে।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি অ্যান্টার্কটিকার চারপাশের জলরাশিকে আনুষ্ঠানিকভাবে “সাদার্ন ওশান” হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। যদিও অনেক বিজ্ঞানী বহু বছর আগেই এই জলভাগকে একটি স্বতন্ত্র অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন, কিন্তু ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের স্বীকৃতি এর গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়িয়ে দেয়।
তথ্য সূত্র: পিপল