এআই: শিশুদের যৌন নির্যাতনের ছবি, বাড়ছে ভয়ঙ্করতা!

একটি অনলাইন নিরাপত্তা সংস্থা সতর্ক করে জানিয়েছে যে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করে তৈরি হওয়া শিশু যৌন নির্যাতনের ছবিগুলো আগের চেয়ে অনেক বেশি বাস্তবসম্মত হয়ে উঠছে।

ইন্টারনেট ওয়াচ ফাউন্ডেশন (আইডব্লিউএফ) নামের এই সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে শিশুদের যৌন নির্যাতনের উদ্দেশ্যে তৈরি হওয়া ছবি ও ভিডিওর মানও বাড়ছে, যা উদ্বেগের কারণ।

আইডব্লিউএফ তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে যে, ২০২৪ সালে তারা এআই-নির্মিত শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি সংক্রান্ত ২৪৫টি অভিযোগ পেয়েছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৩৮০ শতাংশ বেশি।

এই অভিযোগগুলোর মধ্যে ৭,৬৪৪টি ছবি এবং অল্প কিছু ভিডিও ছিল। এছাড়াও, এসব ছবির মধ্যে একটি বড় অংশ ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরির, যা সবচেয়ে গুরুতর ধরনের শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি ও ভিডিওকে বোঝায়।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, বর্তমানে এই ধরনের ছবিগুলো শুধুমাত্র ডার্ক ওয়েবে সীমাবদ্ধ নেই, বরং সাধারণ ইন্টারনেটেও পাওয়া যাচ্ছে।

এমনকি, প্রশিক্ষিত বিশ্লেষকদের পক্ষেও আসল ছবি ও এআই-নির্মিত ছবির মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে যুক্তরাজ্যের সরকার এআই-এর মাধ্যমে শিশু যৌন নির্যাতনের উপাদান তৈরি, বিতরণ বা সংরক্ষণে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

নতুন আইনে, যারা শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের উদ্দেশ্যে এআই সরঞ্জাম তৈরি বা বিতরণ করবে, তাদের শাস্তি দেওয়া হবে।

আইডব্লিউএফ-এর অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী ডেরেক রে-হিল বলেছেন, ছোট ওয়েবসাইটগুলোর জন্য বিনামূল্যে একটি নতুন নিরাপত্তা সরঞ্জাম (Image Intercept) সরবরাহ করা হচ্ছে, যা তাদের প্ল্যাটফর্মে আপত্তিকর ছবি শনাক্ত করতে এবং তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে।

এই টুলটি ২.৮ মিলিয়ন ছবি সম্বলিত আইডব্লিউএফ-এর একটি ডেটাবেসের মাধ্যমে কাজ করে, যা আপত্তিকর ছবি সনাক্ত করতে সক্ষম।

আইডব্লিউএফ-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে শিশু যৌন নির্যাতনের ছবি বিষয়ক অভিযোগ ৬ শতাংশ বেড়েছে।

এই রিপোর্টে ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই ছিল মেয়েশিশু।

প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী পিটার কাইল বলেছেন, অনলাইনে শিশুদের প্রতি হুমকিগুলো ক্রমাগত বাড়ছে এবং এর সমাধানে উদ্ভাবনী পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *