নতুন চাকরি খুঁজছেন? এআই (AI) কিভাবে সাহায্য করতে পারে!
বর্তমান ডিজিটাল যুগে, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলছে। চাকরির বাজারও এর ব্যতিক্রম নয়। একদিকে যেমন শোনা যায়, এআই হয়তো অনেক চাকরি কেড়ে নেবে, তেমনই এটি চাকরি খোঁজার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করে তুলতে পারে।
বাংলাদেশের চাকরিপ্রার্থীদের জন্য, এআই ব্যবহারের মাধ্যমে কিভাবে একটি ভালো ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া যায় এবং কাঙ্ক্ষিত বেতন পাওয়া যেতে পারে, সেই সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো:
১. গবেষণা এবং প্রস্তুতি:
চাকরির জন্য আবেদন করার আগে, কোম্পানি, তাদের প্রতিযোগী এবং বাজারের অবস্থা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ChatGPT, Perplexity-এর মতো এআই সরঞ্জাম দারুণভাবে সাহায্য করতে পারে। এই টুলসগুলির মাধ্যমে আপনি কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেতে পারেন, যেমন – তাদের সংস্কৃতি, বাজারের অবস্থান ইত্যাদি।
এছাড়া, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোন ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে (যেমন – ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প) আবেদন করা যেতে পারে, সে সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যেতে পারে। তবে, এআই সবসময় নির্ভুল তথ্য নাও দিতে পারে। তাই অন্য উৎস থেকে তথ্য যাচাই করে নেওয়া ভালো।
২. দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রাসঙ্গিকতা:
এআই আপনার পেশাগত উন্নতির পথেও সাহায্য করতে পারে। JobsGPT-এর মতো সরঞ্জাম ব্যবহার করে, আপনি আপনার কর্মক্ষেত্রের পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন। কোন ধরনের দক্ষতা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, সে সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে।
এর মাধ্যমে, আপনি আপনার কর্মজীবনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারেন এবং ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন।
৩. আবেদনপত্র তৈরি এবং উপস্থাপন:
চাকরির জন্য আবেদন করার সময়, আপনার আবেদনপত্রটিকে আকর্ষণীয় করে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানেও এআই আপনার সহযোগী হতে পারে। তবে, সবসময় মনে রাখতে হবে, আপনার নিজস্বতা বজায় রাখা জরুরি।
ChatGPT, Grammarly, Hemingway-এর মতো সরঞ্জাম ব্যবহার করে আপনি আপনার লেখার মান উন্নত করতে পারেন। আপনার আবেদনপত্রে, আপনি কেন এই চাকরিটির জন্য আগ্রহী, সেই বিষয়ে নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করুন।
কোম্পানির পণ্য বা তাদের লক্ষ্য সম্পর্কে আপনার ধারণা থাকলে, তা উল্লেখ করতে পারেন।
৪. ইন্টারভিউ এবং বেতন আলোচনা:
ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রেও এআই সাহায্য করতে পারে। ChatGPT-এর উন্নত ভয়েস মোড ব্যবহার করে আপনি ইন্টারভিউয়ের জন্য অনুশীলন করতে পারেন। এটি আপনার দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
এছাড়াও, Google-এর ডিজিটাল স্কিল ট্রেনিং-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলিও এআই-এর মাধ্যমে ক্যারিয়ার বিষয়ক পরামর্শ দিয়ে থাকে। ইন্টারভিউতে, এআই-এর ব্যবহার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এর উত্তর দিন।
আপনি কিভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন, তা বুঝিয়ে বলতে পারেন।
বেতন আলোচনার ক্ষেত্রে, আপনি Glassdoor, Payscale-এর মতো এআই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন। এর মাধ্যমে, আপনি সম্ভাব্য বেতন সম্পর্কে ধারণা পাবেন এবং আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
এছাড়াও, আপনার অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার ভিত্তিতে, আপনি আপনার বেতনের বিষয়ে দর কষাকষি করতে পারেন। মনে রাখবেন, বর্তমান বাজারে আপনার কাজের মূল্য কত, সে সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
উপসংহার:
এআই নিঃসন্দেহে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা চাকরিপ্রার্থীদের জন্য অনেক সুযোগ তৈরি করে। তবে, এর সঠিক ব্যবহারের জন্য সচেতনতা এবং নিজস্বতা বজায় রাখা জরুরি। বাংলাদেশের চাকরিপ্রার্থীরা, এআই-এর সাহায্য নিয়ে তাদের কর্মজীবনের লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: The Guardian