মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করতে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence – এআই) এবং স্যাটেলাইট প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। গত শুক্রবার ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এর পরেই ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য এই প্রযুক্তি কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভূমিকম্পের পরপরই, স্যাটেলাইট (Satellite) মান্দালয়ের ছবি তোলে এবং সেই ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে মাইক্রোসফটের ‘এআই ফর গুড ল্যাব’ (AI for Good Lab)। এই কাজে সাহায্য করেছে ‘প্ল্যানেট ল্যাবস’ (Planet Labs) নামক একটি সংস্থা, যাদের ১৫টি স্যাটেলাইট পৃথিবী প্রদক্ষিণ করছে।
এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্ষতির পরিমাণ দ্রুত নিরূপণ করা সম্ভব হয়েছে, যা উদ্ধারকর্মীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে, এই কাজটি শুরুতে সহজ ছিল না। মেঘের কারণে ছবি পেতে সমস্যা হচ্ছিল। মাইক্রোসফটের প্রধান ডেটা বিজ্ঞানী জুয়ান লাভিস্তা ফেরেস জানান, “এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মেঘ ভেদ করে দেখা সম্ভব নয়।”
পরে অবশ্য মেঘ সরে গেলে স্যাটেলাইট ছবি পাঠাতে সক্ষম হয় এবং সেই ছবি বিশ্লেষণ করে এআই।
এআই বিশ্লেষণের ফলাফলে জানা যায়, মান্দালয়ে ৫১৫টি ভবনের ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে এবং ১,৫২৪টি ভবনের ২০ থেকে ৮০ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।
এই তথ্যগুলো সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে দ্রুত সাহায্য পাঠাতে সহায়তা করবে।
জুয়ান লাভিস্তা ফেরেস আরও বলেন, “ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে, এআইকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হয়। কারণ ভূমিকম্পের ফলে পুরো শহরেই ক্ষতি হতে পারে এবং তাৎক্ষণিক সহায়তা কোথায় প্রয়োজন, তা বোঝা কঠিন।”
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা চিহ্নিত করার এই প্রযুক্তি ত্রাণ সংস্থাগুলোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে তারা দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছাতে পারবে।
উদাহরণস্বরূপ, এই তথ্য রেড ক্রসের মতো সাহায্য সংস্থাকে সরবরাহ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশও একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রযুক্তি আমাদের দেশেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস