কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence – AI) প্রযুক্তি এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর ব্যবহার বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে কর্মসংস্থান হারানোর আশঙ্কা।
সম্প্রতি, একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ভবিষ্যতে শ শ কোটি মানুষের চাকরি হারানোর সম্ভবনা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বিশেষভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, খুব শীঘ্রই অফিসের সাধারণ কর্মী বা ‘হোয়াইট কলার’ কর্মীদের প্রায় অর্ধেক চাকরি হারাতে পারেন।
তার মতে, এআই প্রযুক্তি মানুষের চেয়েও ভালো কাজ করতে শুরু করবে এবং এর ফলস্বরূপ এমনটা ঘটবে।
তবে, এই বক্তব্যের সঙ্গে অনেকেই ভিন্নমত পোষণ করেছেন। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এআই একদিকে যেমন কিছু কাজ কেড়ে নেবে, তেমনি নতুন ধরনের কাজের সুযোগও তৈরি করবে।
তাদের মতে, অতীতে কম্পিউটার প্রযুক্তি আসার পরও যেমন কর্মসংস্থান কমে যায়নি, বরং নতুন নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছিল, এক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এআই প্রযুক্তি নিয়ে উদ্বেগের কারণ হলো এর ব্যাপকতা। এই প্রযুক্তি এখন শুধু কিছু বিশেষ কাজ নয়, বরং অনেক ধরনের কাজ করতে সক্ষম।
উদাহরণস্বরূপ, বর্তমানে উন্নত এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে চিঠি লেখা, সংক্ষিপ্তসার তৈরি করা বা জটিল বিষয়গুলো সহজে ব্যাখ্যা করা সম্ভব হচ্ছে।
কিন্তু এই প্রযুক্তি এখনো ত্রুটিমুক্ত নয়। অনেক সময় এটি ভুল তথ্য দেয় বা মানুষের মতো সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআইয়ের এই সীমাবদ্ধতাগুলো দূর করতে না পারলে, এর ব্যাপক ব্যবহার কঠিন হবে।
বাংলাদেশেও এআই প্রযুক্তির প্রভাব বাড়ছে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি খাতে এর ব্যবহার শুরু হয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, ব্যাংকিং, স্বাস্থ্যসেবা এবং তৈরি পোশাক শিল্পে এআই ব্যবহারের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
তবে, বাংলাদেশে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে কর্মসংস্থানের ওপর কেমন প্রভাব পড়বে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এআইয়ের ভালো-মন্দ দুটো দিকই রয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে উৎপাদনশীলতা বাড়বে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।
তবে, এর কারণে কিছু মানুষের চাকরি হারানোর সম্ভবনাও রয়েছে। তাই, এখনই এআই প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।
প্রযুক্তি শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে কর্মীদের নতুন দক্ষতা অর্জন এবং পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন