কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে গুগল।
তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যের কর্মীরা প্রশাসনিক কাজে এআই ব্যবহার করে বছরে প্রায় ১২২ ঘণ্টা সময় বাঁচাতে পারে। এর ফলে দেশটির অর্থনীতিতে প্রায় ৪00 বিলিয়ন পাউন্ড অতিরিক্ত যোগ হতে পারে।
গুগলের ‘এআই ওয়ার্কস’ নামের পাইলট প্রোগ্রামের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রোগ্রামটি পরিচালনার সময়, কর্মীদের এআই ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার মতো সাধারণ পদক্ষেপের মাধ্যমেই নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার দ্বিগুণ করা সম্ভব হয়েছে।
এর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।
গবেষণায় দেখা যায়, অনেক কর্মী, বিশেষ করে কম সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন এবং বয়স্ক নারীদের মধ্যে এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রে দ্বিধা ছিল।
তাদের উদ্বেগের কারণ ছিল, তারা মনে করতেন, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা তাদের জন্য বৈধ বা ন্যায্য হবে কিনা।
গুগলের পক্ষ থেকে কর্মীদের এই বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়া হয় এবং তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
এর ফলস্বরূপ, প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার কয়েক মাস পরও তারা নিয়মিতভাবে এআই ব্যবহার করতে শুরু করেন।
প্রশিক্ষণের আগে, পাইলট প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারী ৫৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে মাত্র ১৭ শতাংশ সপ্তাহে একবার এআই ব্যবহার করতেন এবং ৯ শতাংশ করতেন প্রতিদিন।
প্রশিক্ষণ ও উৎসাহের ফলে তিন মাস পর, তাদের মধ্যে ৫৬ শতাংশ সপ্তাহে এআই ব্যবহার করা শুরু করেন এবং ২৯ শতাংশ এটিকে দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিণত করেন।
এই গবেষণা থেকে বোঝা যায়, কর্মীদের মধ্যে এআই ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করতে এবং তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহজ কিছু পদক্ষেপই যথেষ্ট।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।
দেশের পোশাক শিল্প, সরকারি দপ্তর এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এআই ব্যবহারের মাধ্যমে কর্মীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
এর ফলে সময় সাশ্রয় হবে এবং দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তবে, এআই ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মনে রাখা দরকার।
কর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি, তাদের মধ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের বৈধতা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
এছাড়া, এআই ব্যবহারের ফলে কর্মসংস্থান হারানোর মতো বিষয়গুলোও বিবেচনা করতে হবে।
গুগলের এই গবেষণা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা হতে পারে।
এখানে এআই ব্যবহারের সম্ভাবনা অনেক।
সরকার, বিভিন্ন সংস্থা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এআই ব্যবহারের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা গেলে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: CNN