ভিসা এবং বোর্ডিং পাস ছাড়াই আকাশপথে ভ্রমণ? শীঘ্রই আসছে যুগান্তকারী পরিবর্তন।
বিমান ভ্রমণে এবার আসতে চলেছে বড়সড় পরিবর্তন। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো বোর্ডিং পাসের ঝামেলা অথবা বিমানবন্দরে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে চেকিংয়ের দিন শেষ হতে চলেছে।
আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইসিএও) নামের জাতিসংঘের একটি সংস্থা বিমানবন্দর এবং এয়ারলাইন্সের নিয়মকানুন পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে। তাদের নতুন পরিকল্পনা হলো ‘ডিজিটাল ট্রাভেল ক্রেডেনশিয়াল’ চালু করা।
এই নতুন ব্যবস্থার মাধ্যমে যাত্রীরা তাদের পাসপোর্টসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য নিজেদের ডিভাইসে সংরক্ষণ করতে পারবেন। ফলে বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় এবং বিমানে ওঠার প্রক্রিয়া সহজ হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, আগামী তিন বছরের মধ্যে এই পরিবর্তন আসতে পারে।
বর্তমানে, বিমানে চড়ার আগে যাত্রীদের অনলাইন অথবা বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়ে চেক-ইন করতে হয়। এরপর তাদের একটি বোর্ডিং পাস দেওয়া হয়, যেখানে বারকোড থাকে।
বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থানে, বিশেষ করে গেটে, এই বারকোড স্ক্যান করার পরেই একজন যাত্রী বিমানে উঠতে পারেন। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে যাত্রীরা তাদের ফোনে একটি ‘জার্নি পাস’ ডাউনলোড করবেন।
টিকিটের বুকিংয়ে কোনো পরিবর্তন হলে, এই পাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হয়ে যাবে। এছাড়াও, যাত্রীরা তাদের পাসপোর্ট ফোনের মাধ্যমে আপলোড করতে পারবেন এবং মুখ শনাক্তকরণের (facial recognition) মাধ্যমে বিমানবন্দরের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করতে পারবেন।
এই পরিবর্তনের ফলে এয়ারলাইন্সগুলো জানতে পারবে, কতজন যাত্রী বিমানে উঠতে প্রস্তুত হচ্ছেন। অ্যামাডিয়াস নামক একটি ভ্রমণ প্রযুক্তি সংস্থার পণ্য ব্যবস্থাপনার পরিচালক ভ্যালেরি ভিয়াল বলেছেন, “গত ৫০ বছরে এটি সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।”
তিনি আরও জানান, “২০০০ সালের শুরুর দিকে ই-টিকিটিং চালুর পর এবারই এত বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এয়ারলাইন্সগুলো এখন আধুনিক সিস্টেমের দিকে ঝুঁকছে, যা অনেকটা অ্যামাজনের মতো।”
এই প্রযুক্তি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য বিমানবন্দরের অবকাঠামোতে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তি স্থাপন এবং মোবাইল ডিভাইস থেকে পাসপোর্ট স্ক্যান করার ব্যবস্থা করা।
নতুন এই প্রযুক্তির কারণে যাত্রী নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা নিয়ে কিছু উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। তবে অ্যামাডিয়াস জানিয়েছে, যাত্রীদের তথ্য ‘টাচপয়েন্ট’-এর (যেমন নিরাপত্তা গেট) সাথে যোগাযোগের ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে মুছে ফেলা হবে।
এছাড়াও, ফ্লাইট বিলম্বিত হলে বা সংযোগকারী ফ্লাইট মিস করলে যাত্রীদের জন্য নতুন ব্যবস্থা চালু করা হবে। বিলম্বের কারণে সংযোগকারী ফ্লাইট মিস করলে, যাত্রীদের ফোনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন ফ্লাইটের তথ্যসহ একটি নোটিফিকেশন চলে যাবে।
তাদের জার্নি পাসও স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপডেট হবে এবং তারা নতুন ফ্লাইটে উঠতে পারবেন।
ভ্যালেরি ভিয়াল আরও বলেন, “বর্তমানে এয়ারলাইন্সগুলোর সিস্টেমগুলো বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। ভবিষ্যতে জার্নি পাস আরও গতিশীল হবে।”
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান