বৈশ্বিক বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থা এয়ারবাস, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ কিনে নিচ্ছে। একই সঙ্গে, আরেক মার্কিন বিমান প্রস্তুতকারক বোয়িংও স্পিরিটের কিছু অংশ অধিগ্রহণ করতে রাজি হয়েছে।
সম্প্রতি উভয় কোম্পানি এই বিষয়ে চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছেছে। মূলত, স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমস আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, এয়ারবাস উত্তর ক্যারোলাইনার কিনস্টন এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টের প্ল্যান্টগুলো অধিগ্রহণ করবে। এই দুটি প্ল্যান্টে এয়ারবাসের এ৩৫০ বিমানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এ২২০ বিমানের কার্বন উইং তৈরি করা হয়।
অন্যদিকে, বোয়িং স্পিরিটের অন্যান্য কিছু অংশ নেবে। বোয়িং এর এই পদক্ষেপ তাদের বহুল বিক্রিত ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনার অংশ।
জানা গেছে, এয়ারবাস স্পিরিটকে প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হারে প্রায় ২ হাজার ১ শত কোটি টাকার বেশি) ঋণ সহায়তা দেবে। এছাড়া, এয়ারবাস স্পিরিট থেকে প্রায় ৪৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪ হাজার ৬ শত কোটি টাকার বেশি) ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাবে।
স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমসের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা আইরিন এস্তেভেস জানিয়েছেন, বোয়িংয়ের সঙ্গে তাদের এই চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
অন্যদিকে, বোয়িং কমার্শিয়াল এয়ারপ্লেনসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টেফানি পোপ এবং স্পিরিট অ্যারোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যাট শানাহান কর্মীদের উদ্দেশ্যে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, এয়ারবাসের বাইরে থাকা বেলফাস্ট এবং স্কটল্যান্ডের প্রেসটউইকের কিছু কাজ সম্ভবত বোয়িংয়ের অধীনে চলে যাবে।
উল্লেখ্য, স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমস গত বছর তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা প্রকাশ করেছিল। তাদের আর্থিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে উভয় বিমান প্রস্তুতকারক সংস্থাই তাদের সহায়তা করেছে।
ফেব্রুয়ারিতে স্পিরিট জানিয়েছিল, তাদের কাছে প্রায় ৮৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৯ হাজার ৩ শত কোটি টাকার বেশি) নগদ অর্থ রয়েছে। তবে তারা ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে প্রায় ৬৫০ থেকে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৬ হাজার ৮ শত থেকে ৭ হাজার ৪ শত কোটি টাকার বেশি) নগদ অর্থ হারাতে পারে।
এয়ারবাসের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা থমাস টোয়েফার জানিয়েছেন, এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ তারা স্পিরিটের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করার আশা করছেন। আর বোয়িংয়ের সঙ্গে পুরো চুক্তিটি সম্ভবত তৃতীয় প্রান্তিকে শেষ হবে।
এই চুক্তির ফলে বিশ্বজুড়ে বিমান শিল্পের সরবরাহ শৃঙ্খলে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাংলাদেশের বিমান চলাচল এবং যাত্রী পরিবহনেও প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন