বিমানবন্দরে বিনামূল্যে ওয়াইফাই ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন: আপনার ডেটা সুরক্ষায় কিছু জরুরি টিপস।
আজকাল সাইবার নিরাপত্তা (cybersecurity) নিয়ে আলোচনা সর্বত্র। বিমানবন্দরে (airport) উপলব্ধ বিনামূল্যে ওয়াইফাই (Wi-Fi) ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় আমরা বিনা দ্বিধায় এই পাবলিক নেটওয়ার্কগুলিতে (public network) সংযোগ করি, যা আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা (cybersecurity experts) বলছেন, বিমানবন্দরের পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করা সবচেয়ে বড় ভুলগুলোর মধ্যে একটি।
আসলে, বিমানবন্দরের পাবলিক ওয়াইফাই একটি উন্মুক্ত নেটওয়ার্ক, যা হ্যাকারদের (hackers) জন্য সহজ লক্ষ্য। এই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে, তারা আপনার ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড (password) এবং অন্যান্য সংবেদনশীল ডেটা (sensitive data) চুরি করতে পারে।
শুধু তাই নয়, তারা আপনার ডিভাইসে ম্যালওয়্যার (malware) ইনস্টল করতে পারে, যা আপনার অজান্তেই আপনার সমস্ত তথ্য হাতিয়ে নিতে সক্ষম। বিশ্বজুড়ে সাইবার অপরাধের (cybercrime) সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং এর শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের (US) ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (Federal Bureau of Investigation – FBI)-এর তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৪ সালেই ইন্টারনেট (internet) অপরাধের কারণে মানুষ প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় হিসাব করলে ১ লক্ষ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বেশি) ক্ষতির শিকার হয়েছে।
এই ধরনের অপরাধের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ব্যক্তিগত তথ্য (personal data) চুরি ছিল অন্যতম প্রধান অভিযোগ।
তাহলে, বিমানবন্দরের ওয়াইফাই ব্যবহার করার সময় নিজেকে কীভাবে সুরক্ষিত রাখবেন?
প্রথমত, বিমানবন্দরের ওয়াইফাই ব্যবহার করার পরিবর্তে আপনার মোবাইল ফোনের ব্যক্তিগত হটস্পট (personal hotspot) তৈরি করা সবচেয়ে নিরাপদ উপায়। এর মাধ্যমে, আপনি একটি সুরক্ষিত সেলুলার (cellular) সংযোগ ব্যবহার করতে পারবেন, যা হ্যাকারদের আক্রমণ থেকে আপনার ডেটাকে রক্ষা করবে।
দ্বিতীয়ত, যদি হটস্পট ব্যবহার করা সম্ভব না হয়, তাহলে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (virtual private network – VPN) ব্যবহার করতে পারেন। একটি ভালো ভিপিএন আপনার ইন্টারনেট সংযোগকে এনক্রিপ্ট করে (encrypt), যা অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রদান করে।
নির্ভরযোগ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক কোনো কোম্পানির ভিপিএন ব্যবহার করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এছাড়াও, বিমানবন্দরের ওয়াইফাই ব্যবহার করার সময় কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত। যেমন – আর্থিক লেনদেন, ইমেল (email) বা সামাজিক মাধ্যম (social media) অ্যাকাউন্টে লগইন করা এড়িয়ে চলুন।
যদি একান্তই ওয়াইফাই ব্যবহার করতে হয়, তবে ওয়েদার (weather) চেক করার মতো সাধারণ কাজগুলো করতে পারেন।
মনে রাখবেন, বিমানবন্দরের ওয়াইফাই ব্যবহার করার সময় আপনি যা করছেন, তা যেন এমন কিছু হয় যা সবার সামনে প্রকাশ করতে আপনার কোনো দ্বিধা নেই।
এছাড়াও, হ্যাকাররা প্রায়ই ভুয়া ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক তৈরি করে ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে। তাই, কোনো নেটওয়ার্কে সংযোগ করার আগে নিশ্চিত করুন যে সেটি বিমানবন্দরের নিজস্ব নেটওয়ার্ক।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামান্য সচেতনতা অবলম্বন করে আপনি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখতে পারেন। আপনার ডেটার সুরক্ষার দায়িত্ব আপনার নিজের।
তথ্য সূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার (Travel and Leisure)