শিরোনাম: বিমানবন্দরে হারিয়ে যাওয়া হীরার খোঁজে কর্মীদের অদম্য চেষ্টা, মুগ্ধতা ছড়িয়েছে বিশ্বজুড়ে
দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি শেষে অবশেষে যখন এপ্রিল শ্মিটস পেন্সিলভেনিয়ার পিটসবার্গ বিমানবন্দরে নিজের লাগেজটির জন্য অপেক্ষা করছিলেন, তখনও হয়তো তিনি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি যে তার জন্য সেখানে অন্যরকম কিছু অপেক্ষা করছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ১৭ দিনের এক কর্ম সফর শেষে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর, লাগেজ বেল্টে হাত লেগে তার বাগদানের আংটির হীরাটি খুলে যায়।
হীরা হারানোর পর এপ্রিলের মন ভেঙে গিয়েছিল। এরপর তিনি দ্রুত বিমানবন্দরে ফিরে আসেন, আশেপাশে ভালোভাবে খুঁজতে শুরু করেন।
বিমানবন্দরের কর্মীরাও এগিয়ে আসেন সাহায্যের হাত নিয়ে। বিমানবন্দরের রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের চারজন কর্মী প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে টর্চলাইট হাতে হীরাটি খুঁজেছেন। তারা এমনকি লাগেজ বেল্টের ভেতরের অংশেও ভালোভাবে খুঁজেছিলেন, যা ছিল অনেকটা লোহার খাঁচার মতো।
কিন্তু প্রথমে তাদের চেষ্টা সফল হয়নি। হতাশ হয়ে এপ্রিল বাড়ি ফিরে যান।
কিন্তু বিমানবন্দরের কর্মীরা হাল ছাড়েননি। এপ্রিল চলে যাওয়ার পরও তারা লাগাতার খুঁজে চলেন।
একের পর এক ফ্লাইট আসছিল, আর আসছিল অসংখ্য যাত্রীর লাগেজ। কিন্তু তাদের মনোযোগ ছিল একটাই—হারানো হীরাটি খুঁজে বের করা।
অবশেষে, এপ্রিলের বাড়ি ফেরার প্রায় চার ঘণ্টা পর, তারা ফোন করে জানান—কাঙ্খিত সেই হীরাটি খুঁজে পাওয়া গেছে।
কর্মীরা দুটি পেইন্ট স্টিক টেপ দিয়ে জুড়ে, লাগেজ বেল্টের নিচে জমে থাকা ময়লা থেকে হীরাটি উদ্ধার করেন। খবরটি শুনে এপ্রিল এতটাই অবাক হয়েছিলেন যে তার মুখ থেকে কথা সরেনি।
তিনি দ্রুত বিমানবন্দরে ছুটে যান এবং কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আশ্চর্যজনকভাবে, ঘটনাটি ঘটেছিল ১৩ই জুন, শুক্রবার। এপ্রিলের স্বামী তাকে ৩০ বছর আগে ১৩ই মার্চ, শুক্রবার আংটিটি পরিয়েছিলেন এবং তারা বিয়েও করেন ১৯৯২ সালের ১৩ই নভেম্বর, শুক্রবার।
এই কাকতালীয় ঘটনা যেন আরও একবার বুঝিয়ে দেয়, কোনো কিছুই ভাগ্যের বাইরে নয়। এপ্রিল জানিয়েছেন, কর্মীদের এমন আন্তরিকতায় তিনি মানবজাতির প্রতি বিশ্বাস ফিরে পেয়েছেন।
এপ্রিল জানান, “ওই মানুষগুলো আমাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন না। আমার কত দিনের বিবাহিত জীবন, আমার স্বামীর সম্পর্কে বা হীরাটির মূল্য— কিছুই তাদের জানা ছিল না। কিন্তু তারা তাদের কাজটি সততার সঙ্গে করেছেন।” কর্মীদের এই ধরনের মানবিক আচরণ সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।
বিদ্যুৎ মিস্ত্রি স্টিভ টারকালি, যিনি এই অনুসন্ধানে অংশ নিয়েছিলেন, তিনি জানান, এই ঘটনার সুখকর সমাপ্তি ঘটাতে পেরে তিনি আনন্দিত। “আমি যখন এপ্রিলের মুখে হাসি দেখেছি, তখন মনে হয়েছে, আমাদের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে,” তিনি যোগ করেন।
তথ্য সূত্র: পিপলস