মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের ভোটাধিকার খর্ব করার অভিযোগে একটি ফেডারেল আদালত রাজ্যের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, রাজ্যের কংগ্রেশনাল জেলার নতুন মানচিত্র তৈরি করার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে কৃষ্ণাঙ্গদের ভোটকে দুর্বল করা হয়েছে।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, রাজ্যের কর্মকর্তারা এমন একটি পরিকল্পনা তৈরি করেছেন, যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে জেতানোর সুযোগ কমে যায়। রাজ্যের এই পদক্ষেপের ফলে, কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর ভোটের অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে বলে আদালত মনে করে।
২০২০ সালের আদমশুমারির পর আলাবামায় নতুন করে নির্বাচনী এলাকা পুনর্বিন্যাস করা হয়। রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ২৭ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ হওয়া সত্ত্বেও, নতুন মানচিত্রে মাত্র একটি জেলায় তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল। এর ফলস্বরূপ, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের রাজনৈতিক প্রভাব কমে যায়।
আদালত জানিয়েছে, রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের পেছনে বৈষম্যমূলক উদ্দেশ্য ছিল। আদালত এখন বিবেচনা করছে, ভবিষ্যতে রাজ্যের নির্বাচনী পরিকল্পনা অনুমোদনের জন্য ফেডারেল সরকারের পূর্বানুমোদন প্রয়োজন কি না। এই ধরনের পদক্ষেপ সাধারণত ‘ভোটিং রাইটস অ্যাক্ট’-এর অধীনে নেওয়া হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ভোটাধিকার রক্ষা করে।
আলাবামার এই ঘটনার সূত্রপাত হয় কয়েক বছর আগে। যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টসহ অন্যান্য আদালত এর আগে রাজ্যের একটি মানচিত্র প্রত্যাখ্যান করেছিল, যেখানে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের জন্য কেবল একটি জেলা ছিল।
আদালতের এই রায়ের পর, রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল স্টিভ মার্শাল-এর কার্যালয় থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, যারা এই মানচিত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন, তারা এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটিকে কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আদালতের নির্দেশে, ২০২৪ সালের নির্বাচনে একজন বিশেষজ্ঞ একটি অস্থায়ী মানচিত্র তৈরি করেন। এর ফলে, প্রায় ১৫০ বছর পর আলাবামা থেকে দুজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রতিনিধি কংগ্রেসে নির্বাচিত হন।
এই মামলার প্রেক্ষাপটে, ভোটাধিকার আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, কৃষ্ণাঙ্গদের ভোটকে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল করার রাজ্যের সিদ্ধান্ত, তাদের আগের অবস্থানকে সমর্থন করে না। আদালত আরও উল্লেখ করেছে, আলাবামা সরকার কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীর প্রতি তাদের আচরণে অনেক উন্নতি করেছে, তবে ভোটের অধিকারের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।
তথ্য সূত্র: সিএনএন