আলাস্কার প্রত্যন্ত অঞ্চলে আঘাত হানা এক শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে সেখানকার জনজীবন বিপর্যস্ত। এতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২ হাজারের বেশি মানুষ।
ভয়াবহ এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের অন্তত ১৮ মাস পর্যন্ত বাড়ি ফেরা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন অঙ্গরাজ্যের গভর্নর।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, হ্যালোং নামের একটি টাইফুনের প্রভাবে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়টি ছিল ক্যাটাগরি-২ মাত্রার হারিকেনের মতো শক্তিশালী। এর ফলে সেখানকার নিচু এলাকাগুলোতে ব্যাপক বন্যা দেখা দেয়।
ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে একটি গ্রামে ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ধসে গেছে। এছাড়া, কয়েকটি গ্রামের এক-তৃতীয়াংশ বাড়ি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আলাস্কার গভর্নর মাইক ডুনলিভি হোয়াইট হাউসের কাছে জরুরি সহায়তা চেয়েছেন, যাতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দ্রুত সহায়তা পাঠানো যায়। এছাড়া, ফেডারেল সরকারের কাছেও জরুরি ত্রাণ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বাস্তুচ্যুত হওয়া মানুষদের জন্য খাদ্য ও অন্যান্য জরুরি সামগ্রীর ব্যবস্থা করছে। একইসঙ্গে, তাদের পুনর্বাসনের জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
আবহাওয়ার চরম প্রতিকূলতা এবং দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পক্ষে শীতকালে নিজ গ্রামে ফেরা কঠিন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানকার আদিবাসী গ্রামগুলোতে সাধারণত কয়েকশ মানুষের বাস।
এদের জীবনযাত্রা মূলত শিকার ও মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তাদের জীবনধারণের পথও কঠিন হয়ে পড়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে থাকা মানুষেরা জানিয়েছেন, তাঁরা নতুন করে জীবন শুরু করার চেষ্টা করছেন। স্থানীয় প্রশাসন এবং বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠন বাস্তুচ্যুতদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে।
তারা ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আলাস্কার এই দুর্যোগ সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রায় দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে। ঘরবাড়ি হারানো মানুষগুলোর স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে দীর্ঘ সময় লাগবে।
সরকার ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত পুনর্বাসন করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস