মা দিবসে আলাস্কার অভিনব উদযাপন: বরফ যুগের প্রাণীদের সাথে!

আলাস্কার এক ভিন্নধর্মী মা দিবস: বরফ যুগের প্রাণীদের সাথে কাটানো সময়।

প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার, সারা বিশ্বের মতো আলাস্কায়ও পালিত হয় মা দিবস। তবে এখানকার মা দিবসের উদযাপন একটু অন্যরকম।

আলাস্কার পালমার শহরে অবস্থিত ‘মাস্ক অক্স ফার্ম’-এ এই দিনে মায়েরা বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারেন, আর উপভোগ করতে পারেন এক বিরল অভিজ্ঞতা।

এখানে তারা বরফ যুগের স্মৃতিচিহ্ন, মাস্ক অক্স বা তুষার গরুর সাথে সময় কাটান।

আলাস্কার এই মাস্ক অক্স ফার্মে মা দিবস উদযাপনের রীতি বহু পুরনো।

১৯৮৬ সাল থেকে প্রতি বছর এই দিনে ফার্মটি তাদের গ্রীষ্মকালীন মৌসুম শুরু করে।

এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো মাস্ক অক্স বা তুষার গরু।

এই ফার্মে প্রায় ৭৫টির মতো মাস্ক অক্স রয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে সদ্যোজাত শাবকও।

এদের সাথে এখানকার দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

এছাড়াও, ‘Trebek’ নামের একটি বয়স্ক ষাঁড়ও রয়েছে, যাকে সবাই ভালোবাসে।

প্রয়াত ‘Jeopardy!’ উপস্থাপক অ্যালেক্স ট্রেবেকের সম্মানে এই ষাঁড়ের নামকরণ করা হয়েছে।

মাস্ক অক্স এক সময় উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বিচরণ করত।

এরা ছিল বিশাল আকৃতির, লোমশ এবং শক্তিশালী প্রাণী।

বর্তমানে এদের আদি আবাসস্থল গ্রিনল্যান্ড ও কানাডা।

১৯৩০-এর দশকে এদের আলাস্কাতে ফিরিয়ে আনা হয়।

বর্তমানে প্রায় ৫০০০ মাস্ক অক্স আলাস্কার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ায়।

আকারে এরা গরুর মতো হলেও এদের বৈশিষ্ট্য বেশ আলাদা।

পূর্ণবয়স্ক পুরুষ মাস্ক অক্স প্রায় ৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং ওজন প্রায় ৩৬০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়।

স্ত্রী মাস্ক অক্স একটু ছোট আকারের হয়ে থাকে।

এদের সারা শরীরে লম্বা লোম থাকে, যা এদের ঠান্ডা থেকে বাঁচায়।

এদের কাছাকাছি আত্মীয় হলো আর্কটিক অঞ্চলের ছাগল।

মা দিবসে এখানে আসা মানুষের সংখ্যা ১৫০০ ছাড়িয়ে যায়।

এটি যেন আলাস্কার মানুষের কাছে একটি ঐতিহ্য।

এই দিনে দর্শনার্থীরা মাস্ক অক্সদের খুব কাছ থেকে দেখতে পারেন, তাদের সম্পর্কে জানতে পারেন এবং তাদের সংরক্ষণে সহায়তা করতে পারেন।

ফার্মের কর্মীরা জানান, মা দিবসে আগত দর্শনার্থীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনুদান তাদের জন্য অনেক মূল্যবান।

আলাস্কার এই মাস্ক অক্স ফার্ম শুধু একটি বিনোদন কেন্দ্র নয়, এটি একইসঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণারও একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

এখানে আগতরা মাস্ক অক্সদের জীবনযাত্রা, তাদের পরিবেশ এবং তাদের সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জানতে পারেন।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং পরিবেশ সুরক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এই ধরনের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *