শিরোনাম: আলাস্কার একটি আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের সম্ভাবনা, বিশ্বব্যাপী বিমান চলাচলে প্রভাবের আশঙ্কা
গত কয়েক মাস ধরে আলাস্কার মাউন্ট স্পার আগ্নেয়গিরিটির অস্থিরতা বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা একে পর্যবেক্ষণ করছেন এবং এর অগ্নুৎপাতের সম্ভবনা নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। এই আগ্নেয়গিরি থেকে নির্গত হওয়া ছাইয়ের কারণে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
মাউন্ট স্পার-এর অগ্নুৎপাত হলে এর ছাই আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে বয়ে যেতে পারে, যার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হবে আংকোরেজ শহর। এই শহরটি আগ্নেয়গিরি থেকে প্রায় ৮০ মাইল দূরে অবস্থিত। যদিও সরাসরি মানুষের জীবনহানির সম্ভবনা কম, তবে এর বিরূপ প্রভাবগুলো বেশ গুরুতর হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (U.S. Geological Survey) আলাস্কা ভলকানো অবজারভেটোরির প্রধান বিজ্ঞানী ম্যাট হানি জানিয়েছেন, “ছাই পড়াটা একটা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
আগুনে পোড়া কাঠ থেকে তৈরি হওয়া ছাইয়ের মতো নয়, বরং আগ্নেয়গিরির ছাই খুবই কঠিন, ধারালো এবং কাঁচের মতো। এই ছাই বিমানের ইঞ্জিনকে দ্রুত গলিয়ে দিতে পারে, যা উড়োজাহাজের জন্য মারাত্মক। এছাড়াও, বিমানের জানালাও এতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং ইলেকট্রনিক সার্কিটের ক্ষতি হওয়ারও সম্ভবনা থাকে।
মাউন্ট স্পারের কাছাকাছি কোনো জনবসতি না থাকায় সেখানকার বাসিন্দাদের সরাসরি ক্ষতির সম্ভবনা কম। তবে, ১৯৫৩ এবং ১৯৯২ সালে এই আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে আংকোরেজে ছাই জমেছিল, যার কারণে বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে, আংকোরেজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশ্বের চতুর্থ ব্যস্ততম কার্গো বিমানবন্দর, তাই এর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে তা বাণিজ্যিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে আনবে।
আগুনের ছাইয়ের কারণে শ্বাসকষ্ট, ত্বক ও চোখের সমস্যা হতে পারে। এছাড়া, রাস্তায় ছাইয়ের কারণে গাড়ির চাকা পিছলে যেতে পারে এবং দৃশ্যমানতা কমে যেতে পারে, যা দুর্ঘটনার সম্ভবনা বাড়ায়।
বর্তমানে, বিজ্ঞানীরা মাউন্ট স্পারের কার্যকলাপের ওপর গভীর নজর রাখছেন। যদি তারা দেখেন যে অগ্নুৎপাতের সম্ভবনা বাড়ছে, তবে বিমান চলাচলের সতর্কতা স্তর হলুদ থেকে কমলা করে দেওয়া হতে পারে।
তবে, এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। ভবিষ্যতে কি হবে, তা সময় বলবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, হয় এর অগ্নুৎপাত হবে, নয়তো ধীরে ধীরে এর সক্রিয়তা কমে আসবে।
মাউন্ট স্পারের অগ্নুৎপাত হলে তা বাংলাদেশের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে না, তবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোতে এর কারণে বিলম্ব হতে পারে, যা আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়াও, বিশ্ব অর্থনীতির ওপর এর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভবনা রয়েছে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে আঘাত হানতে পারে। তাই, আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক