আতঙ্কের কারাগার: কেন কুখ্যাতি পেয়েছিল আলকাট্রাজ?

যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত আলকাট্রাজ কারাগার পুনরায় চালু করার প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সান ফ্রান্সিসকো উপকূলের একটি দ্বীপে অবস্থিত এই কারাগার একসময় কুখ্যাত অপরাধীদের আশ্রয়স্থল ছিল।

আল কাপোনের মতো দুর্ধর্ষ অপরাধীরাও এখানে বন্দী ছিলেন। ট্রাম্পের এই প্রস্তাব নিয়ে এরই মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

আশির দশকে, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অধীনে ফেডারেল কারাগার হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আলকাট্রাজ ছিল সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সম্পন্ন একটি স্থান। এখানে আসা বন্দীদের জীবনযাত্রা ছিল খুবই কঠিন।

তাদের মৌলিক অধিকারগুলো বাদে, বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হতো। অন্যান্য কারাগারের তুলনায় এখানে সুযোগ-সুবিধা ছিল খুবই সামান্য।

১৯৩৪ সালে ফেডারেল কারাগার হিসেবে চালু হওয়ার আগে, আলকাট্রাজ দ্বীপটি সামরিক বাহিনীর একটি ঘাঁটি ছিল। ১৮৫০ এর দশকে এখানে একটি দুর্গ তৈরি করা হয়েছিল, যা সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরকে বহিরাগত আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করত।

পরবর্তীতে এটি সামরিক কারাগার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে।

আলকাট্রাজ তার কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য পরিচিত ছিল। এখানে পালানো প্রায় অসম্ভব ছিল।

কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় বেশ কয়েকজন পালানোর চেষ্টা করলেও, তাদের কেউই সফল হতে পারেননি।

১৯৬২ সালে ফ্রাঙ্ক মরিস এবং জন ও ক্লেরেন্স অ্যাংলিন নামের তিন বন্দীর একটি সুপরিকল্পিত পলায়ন প্রচেষ্টা ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছিল। তারা কারাগারের ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা ব্যবহার করে সেল থেকে পালিয়ে যান এবং তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আলকাট্রাজের সবচেয়ে পরিচিত বন্দীদের মধ্যে একজন ছিলেন রবার্ট স্ট্রাউড, যিনি ‘বার্ডম্যান অফ আলকাট্রাজ’ নামে পরিচিত।

পাখিবিদ্যার প্রতি তার আগ্রহের কারণে তিনি এই নামে পরিচিত হন। কারাগারে থাকাকালীন তিনি পাখি নিয়ে গবেষণা করতেন এবং তাদের চিকিৎসার জন্য বই লিখেছিলেন।

দীর্ঘদিন ধরে কারাগারটি রক্ষণাবেক্ষণের উচ্চ খরচ এবং কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে ১৯৬৩ সালে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

বর্তমানে এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রতি বছর এখানে প্রায় ১২ লক্ষ পর্যটকের আগমন ঘটে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় অনেকে একে গুরুত্বহীন বলে মন্তব্য করেছেন।

ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, আলকাট্রাজ এখন একটি জাতীয় উদ্যান এবং এটি পুনরায় চালু করার প্রস্তাব কোনো গুরুতর বিষয় নয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *