আতঙ্কের দিনগুলি! ভয়াবহ ইনজুরির পর ওষুধ নিতে ভয় পেয়েছিলেন সাবেক তারকা

এক সময়ের খ্যাতিমান আমেরিকান ফুটবল খেলোয়াড়, অ্যালেক্স স্মিথ, ২০১৮ সালে মাঠে গুরুতর আঘাত পাওয়ার পর কিভাবে ব্যথানাশক ঔষধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন, সেই বিষয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন। আঘাতের কারণে তাঁর পায়ে একাধিক অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল এবং জীবনহানির সম্ভবনাও তৈরি হয়েছিল।

খেলার মাঠে ফিরে আসার পর তিনি কীভাবে এই ঔষধগুলো নিয়ে ভীত ছিলেন, সেই অভিজ্ঞতাই এখন সবার সাথে ভাগ করে নিচ্ছেন।

ন্যাশনাল ফুটবল লীগ (এনএফএল)-এ একজন কোয়ার্টারব্যাক হিসেবে স্মিথের খ্যাতি ছিল আকাশচুম্বী। ফুটবল খেলার এই গুরুত্বপূর্ণ পজিশনে থেকে তিনি মাঠের খেলায় নিজের দক্ষতা দেখিয়েছেন।

২০১৮ সালে ওয়াশিংটন কমান্ডার্সের হয়ে খেলার সময় এক ভয়াবহ ইনজুরিতে পড়েন তিনি। তাঁর ডান পায়ে হাড় ভেঙে যায়, যার ফলস্বরূপ একাধিকবার অস্ত্রোপচার করতে হয়। শুধু তাই নয়, এই আঘাতের কারণে তিনি সেপসিস নামক মারাত্মক সংক্রমণে আক্রান্ত হন, যা তাঁর জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছিল। ডাক্তাররা পর্যন্ত তাঁর পা কেটে ফেলতে চেয়েছিলেন।

এই কঠিন পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসার জন্য স্মিথকে দীর্ঘ ২১ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হয়। এরপর তিনি আবার খেলায় ফিরে আসেন, যা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।

কিন্তু এই ফিরে আসার পথে তাঁকে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর যখন তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন, তখন ব্যথানাশক ঔষধের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে তাঁর এবং তাঁর স্ত্রীর উপর এসে পড়ে। ঔষধের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে তাঁদের বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল, সেইসাথে ঔষধের অতিরিক্ত ডোজ হলে কি করতে হবে, সেই বিষয়েও গাইড করা হয়েছিল।

স্মিথ জানিয়েছেন, খেলার জগতে আঘাত পাওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। খেলোয়াড়দের মধ্যে ব্যথানাশক ঔষধের প্রতি আসক্তি একটি পরিচিত সমস্যা। তিনি তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনে অনেক সতীর্থকে এই সমস্যায় ভুগতে দেখেছেন।

তাই, ঔষধ ব্যবহারের বিষয়ে তাঁর মনে এক ধরনের ভীতি ছিল। তিনি মনে করতেন, ব্যথানাশক ঔষধের কারণে তাঁর শরীরে অন্য কোনো সমস্যা হতে পারে।

বর্তমানে ৪১ বছর বয়সী স্মিথ চান, খেলার জগৎ এবং সমাজের সকলে যেন ব্যথানাশক ঔষধের ব্যবহার নিয়ে আরও সচেতন হয়। তিনি বিশ্বাস করেন, এই বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।

বর্তমানে, তিনি একটি নতুন প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, যেখানে ব্যথানাশক ঔষধের ব্যবহার এবং এর ব্যবস্থাপনার জন্য ব্যক্তিগত পরিকল্পনা তৈরির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। তাঁর এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো, যারা ব্যথানাশক ঔষধ ব্যবহার করছেন, তাঁদের এই বিষয়ে আরও ভালোভাবে জানতে সাহায্য করা।

যুক্তরাষ্ট্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই ১ কোটি ২০ লক্ষের বেশি মানুষ ব্যথানাশক ঔষধ অপব্যবহার করেছেন। স্মিথ মনে করেন, এই ধরনের ঔষধের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।

খেলাধুলা থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি স্তরে, ব্যথানাশক ঔষধের ব্যবহার এবং এর সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে আলোচনা হওয়া উচিত। এর ফলে, মানুষ সঠিক তথ্য জানতে পারবে এবং ঔষধের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হতে পারবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *