আলো ঝলমলে মঞ্চ, আর তার উল্টো দিকে এক কঠিন অতীত। টিকটক-এর মজার ভিডিও থেকে শুরু করে এখন গানের জগতে সাফল্যের শিখরে ওঠা, অ্যালেক্স ওয়ারেনের জীবন যেন এক সিনেমার চিত্রনাট্য।
এক সময়ের গৃহহীন, ক্যালিফোর্নিয়ার রাস্তায় দিন কাটানো এই তরুণ আজ যুক্তরাজ্যের চার্টে এক নম্বর। আসুন, তার জীবনের গল্প শোনা যাক।
অ্যালেক্স ওয়ারেন, যিনি একসময় ছিলেন সামাজিক মাধ্যমের পরিচিত মুখ, বর্তমানে গানের জগতে নিজের স্থান পাকা করেছেন। তার গাওয়া “অর্ডিনারি” গানটি যুক্তরাজ্যের শীর্ষ গানের তালিকায় টানা পাঁচ সপ্তাহ ধরে এক নম্বরে ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রেও গানটি শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে। এই সাফল্যের আগে, ওয়ারেন পরিচিত ছিলেন তার মজাদার ভিডিওগুলোর জন্য, যা তিনি টিকটকে পোস্ট করতেন।
ওয়ারেনের জীবন সবসময় এত সহজ ছিল না। কৈশোরে তিনি গৃহহীন ছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়ার একটি অভিজাত এলাকার জিম-এ লুকিয়ে সেখানে গোসল করতেন এবং বাথরুমে বসে গান গেয়ে টিকটক ভিডিও বানাতেন।
তার বেড়ে ওঠা ছিল কষ্টের মধ্যে দিয়ে। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের আর্থিক সংকট দেখা দেয়। মায়ের মদ্যপানের কারণে পরিবারে অশান্তি লেগেই থাকত।
১৮ বছর বয়সে বাড়ি থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর তিনি রাস্তায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। এই কঠিন সময়ে, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচিত হন কৌভর অ্যাননের সঙ্গে, যিনি এখন তার স্ত্রী।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচিতি পাওয়ার পর ওয়ারেন “হাইপ হাউস” নামে একটি কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের দলে যোগ দেন। এই দলের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাকে তিনি তার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হিসেবে বর্ণনা করেন।
তবে, একসময় তিনি বুঝতে পারেন, এই ধরনের জীবন তাকে আর আনন্দ দেয় না। এরপর তিনি গানের দিকে মনোযোগ দেন।
ওয়ারেন স্বীকার করেন যে, অতীতে তিনি এমন কিছু কাজ করেছেন যা নিয়ে তিনি লজ্জিত। তবে, তার মতে, সেই কঠিন পরিস্থিতিগুলো তাকে আজকের অবস্থানে আসতে সাহায্য করেছে।
তার নতুন গানগুলো এখন অনেকের কাছে ভালোবাসার প্রতীক। ওয়ারেন মনে করেন, তার গানগুলো মানুষের আবেগ এবং দুঃখের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।
তিনি চান, তার গান শুনে মানুষ যেন তাদের ভেতরের কষ্টগুলো অনুভব করতে পারে এবং সাহস খুঁজে পায়।
অ্যালেক্স ওয়ারেনের এই যাত্রা আমাদের দেখায়, মানুষের জীবন কত বিচিত্র হতে পারে। কঠিন পরিস্থিতি থেকে উঠে এসেও একজন মানুষ কিভাবে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে, অ্যালেক্স ওয়ারেন তার উজ্জ্বল উদাহরণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান