ফিলিপাইনের তরুণ টেনিস তারকা অ্যালেক্সান্দ্রা ইয়ালা, যিনি বর্তমানে বিশ্বের ১৪০ নম্বর খেলোয়াড়, সম্প্রতি মায়ামি ওপেনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। টুর্নামেন্টে ওয়াইল্ড কার্ড নিয়ে প্রবেশ করে তিনি একের পর এক শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়দের হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে যান।
তার এই অসাধারণ জয়যাত্রা শুধু ফিলিপাইনে নয়, সারা বিশ্বজুড়ে ক্রীড়ামোদী মানুষের নজর কেড়েছে।
মাত্র ১৯ বছর বয়সী ইয়ালা, যিনি এর আগে পেশাদার সার্কিটে খুব বেশি পরিচিত ছিলেন না, মায়ামি ওপেনে যেন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।
তিনি প্রাক্তন ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন ইয়েলেনা ওসতাপেঙ্কো, প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জয়ী ম্যাডিসন কিস এবং শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড় ইগা শিয়াওটেককে পরাজিত করেন।
এই তিনটি জয়ই ছিল গ্র্যান্ড স্লাম জয়ীদের বিরুদ্ধে। টেনিসের ইতিহাসে এমন ঘটনা সত্যিই বিরল। সেমিফাইনালে তিনি জেসিকা পেগুলার কাছে পরাজিত হলেও, তার লড়াই ছিল প্রশংসার যোগ্য।
ইয়ালা-র এই সাফল্যে ফিলিপাইনে আনন্দের ঢেউ লেগেছে। দেশটির মানুষজন তার খেলা দেখার জন্য গভীর রাত পর্যন্ত জেগে ছিলেন।
টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার ছাড়াও, ইউটিউবে তার সেমিফাইনাল ম্যাচটি প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার দর্শক উপভোগ করেছেন।
ফিলিপাইনের ক্রীড়াঙ্গনে, বিশেষ করে টেনিসে, ইয়ালা এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছেন। এর আগে কোনো ফিলিপিনো নারী টেনিস খেলোয়াড় গ্র্যান্ড স্লাম জয়ীকে হারাতে পারেননি।
ইয়ালা সেই অচেনা পথটিই যেন নতুন করে চিনিয়েছেন।
ইয়ালা-র উত্থান তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ এর আগে ফিলিপাইনের কোনো খেলোয়াড় এত বড় পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেননি।
১৯৯৯ সালে মারিক্রিস জেন্তস নামে একজন মহিলা খেলোয়াড় বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ২৮৪ নম্বরে ছিলেন, যা ছিল দেশটির জন্য সর্বোচ্চ।
ইয়ালা-র এই সাফল্য শুধু তার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, এটি ফিলিপাইনের তরুণ প্রজন্মের জন্য এক বিরাট অনুপ্রেরণা।
তার এই সাফল্যের হাত ধরে স্পন্সরশিপ এবং ভবিষ্যতের সুযোগগুলোও বাড়ছে।
ইয়ালা-র খেলার ধরনও বেশ আকর্ষণীয়। বাম-হাতি এই খেলোয়াড় কোর্টে খুবই বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে খেলেন।
২০১৬ সালে তিনি জুনিয়র ইউএস ওপেন জিতেছিলেন।
রাফায়েল নাদালের অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়া ইয়ালা-র এই সাফল্য প্রমাণ করে কঠোর পরিশ্রম ও একাগ্রতা থাকলে সাফল্যের চূড়ায় ওঠা সম্ভব।
ইয়ালা-র ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই। তার এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে, তিনি নিঃসন্দেহে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান