মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি হ্রদে বিরল কুমির হামলায় গুরুতর আহত হয়েছে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরী। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ক্যারোলিনার একটি হ্রদে, যা সেখানকার ইতিহাসে প্রথম।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা গেছে, গত ১৩ই জুন শুক্রবার লেক ওয়াকামাও নামক একটি হ্রদে কয়েকজন শিশু খেলাধুলা করছিল। হ্রদটি পরিষ্কার জলের এবং বেশ বড়।
খেলাধুলারত অবস্থায় হঠাৎ এক শিশু “আমাকে কিছু একটা কামড় দিয়েছে!” বলে চিৎকার করে ওঠে। সাথে সাথেই শিশুরা জল থেকে উঠে আসে।
পুলিশ জানায়, ঠিক সেই মুহূর্তেই একটি কুমির জলের ভেতর থেকে মাথা তোলে। হামলায় কিশোরী গুরুতর আহত হলেও সৌভাগ্যবশত তার জীবনহানির কোনো আশঙ্কা নেই।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান স্কট হ্যাট জানান, মেয়েটির শরীরে সেলাই লেগেছে এবং সে এখন সুস্থ আছে। তিনি আরও নিশ্চিত করেছেন, আহত কিশোরীটির বয়স ১২ বছর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হ্রদটিতে প্রায় ৫৭০টি কুমিরের বাস। ঘটনার পর কুমিরটিকে মেরে ফেলা হয়েছে।
উত্তর ক্যারোলিনা বন্যপ্রাণী সম্পদ কমিশন (NCWRC)-এর তথ্য অনুযায়ী, মানুষের ওপর হামলা চালালে কুমির নিধনের এই পদক্ষেপটি স্বাভাবিক নিয়ম।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের প্রথমে ধারণা ছিল কুমিরটির দৈর্ঘ্য ৬ থেকে ৭ ফুটের মতো। কিন্তু পরে পরিমাপ করে দেখা যায়, কুমিরটির দৈর্ঘ্য ছিল ১২ ফুটের বেশি, যা প্রায় ৩.৭ মিটারের সমান।
পুলিশ প্রধান এটিকে একটি “দানব” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। NCWRC-এর কুমির বিশেষজ্ঞ অ্যালিসিয়া ওয়াসমারের মতে, সাধারণত দিনের বেলায় কুমিরেরা হ্রদের আশেপাশে আসে না।
সম্ভবত কোনো কারণে কুমিরটি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছিল। তিনি আরও জানান, বন্যপ্রাণীকে খাবার খাওয়ানো হলে তারা মানুষের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে এবং এমন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে।
কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে সতর্ক করে বলেছে, হ্রদের আশেপাশে কুমির দেখা গেলে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই তাদের খাবার দেওয়া উচিত নয়।
জলে নামার আগে অবশ্যই চারপাশ দেখে নিতে হবে এবং কোনো কুমির নজরে পড়লে দ্রুত জল ত্যাগ করতে হবে। যদিও বাংলাদেশে কুমির নেই, বন্যপ্রাণীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
সুন্দরবনের বাঘ কিংবা অন্যান্য বন্যপ্রাণীর আক্রমণের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। তথ্য সূত্র: পিপলস