প্রেম, ক্ষতি, আর গোপন লজ্জার গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ফরাসি চলচ্চিত্র ‘অ্যালং কেম লাভ’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে ফ্রান্সে ঘটে যাওয়া এক নারীর জীবন-সংগ্রামের কাহিনি এটি। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন ক্যাটেল কুইলভার।
ছবিতে অভিনয় করেছেন আনায়েস দেমউস্টিয়ের ও ভিনসেন্ট ল্যাকোস্ট।
ছবিটির মূল চরিত্র মাদেলিন, যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটানি উপকূলের একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ করে। তার জীবনে আসে ফ্রাঁসোয়া নামের এক যুবক, যে প্যারিসে পড়াশোনা করে।
তাদের দুজনেরই রয়েছে গোপন কিছু কথা। মাদেলিনের সন্তান হয় এক জার্মান অফিসারের সঙ্গে সম্পর্কের ফলে, যার কারণে সমাজের চোখে সে হয় নিন্দিত।
অন্যদিকে, ফ্রাঁসোয়া একজন গে, যা সেই সময়ের সামাজিক প্রেক্ষাপটে ছিল গুরুতর অপরাধ।
তাদের বিয়ে হয় এবং এর মধ্য দিয়ে শুরু হয় নতুন এক জীবন। মাদেলিন একটি বার খোলে এবং ফ্রাঁসোয়া তার অ্যাকাডেমিক জীবন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরে।
এরপর তাদের জীবনে আসে আমেরিকান এক সৈনিক, জিমির চরিত্র। যদিও এই সম্পর্কটি তেমন গভীরতা পায় না।
তারা একটি সুখী পরিবার গঠনের চেষ্টা করে, কিন্তু ফ্রাঁসোয়ার গে-পরিচিতি তাকে তাড়া করতে থাকে।
তাদের জীবনে আসে এক কন্যা সন্তান, কিন্তু ফ্রাঁসোয়ার গোপন পরিচয় তাদের সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।
এদিকে, মাদেলিনের ছেলে ড্যানিয়েল তার বাবার পরিচয় জানতে ব্যাকুল হয়ে ওঠে, যে সম্ভবত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মারা গিয়েছিল।
ছবিটি মূলত ভালোবাসার জটিলতা, গোপন সম্পর্ক, সামাজিক চাপ এবং আত্ম-অনুসন্ধানের গল্প বলে।
ক্যাটেল কুইলভার তাঁর এই ছবিতে রেখেছেন গভীর জীবনবোধ। ছবিটির নির্মাণশৈলী প্রশংসার দাবিদার, যেখানে অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় ছিল দারুণ।
বিশেষ করে আনায়েস দেমউস্টিয়ের এবং ভিনসেন্ট ল্যাকোস্ট-এর অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করে।
তবে, ছবির গল্প বলার ধরনে কোথাও যেন কিছু দুর্বলতা ছিল, যা দর্শকদের কিছুটা হতাশ করতে পারে।
তা সত্ত্বেও, ছবির আবেগ এবং এর বিষয়বস্তু দর্শকদের আকৃষ্ট করবে।
যারা সম্পর্কের গভীরতা এবং সমাজের নানা দিক নিয়ে নির্মিত সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য ‘অ্যালং কেম লাভ’ একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।
ছবিটি সম্ভবত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবগুলোতে প্রদর্শিত হবে এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেতে পারে।
মুক্তির খবর পাওয়া মাত্রই আমরা দর্শককে জানাতে চেষ্টা করব।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান