শিরোনাম: জীবনযাত্রার পরিবর্তনে আলঝেইমার্সের ঝুঁকি কমানো সম্ভব: নতুন গবেষণায় সম্ভাবনা
ঢাকা, [আজকের তারিখ]। আলঝেইমার্স রোগের ঝুঁকি কমাতে জীবনযাত্রার পরিবর্তন কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে নতুন একটি গবেষণা আশার আলো দেখাচ্ছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং মানসিক চাপ কমানোর মতো কিছু সাধারণ পরিবর্তনের মাধ্যমে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করা যেতে পারে।
গবেষণাটি বায়ো-র্যান্ড (BioRAND) নামক একটি প্রকল্পের অংশ, যেখানে আলঝেইমার্স ও অন্যান্য নিউরোডিজেনোরেটিভ রোগ প্রতিরোধের উপায় নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।
ফ্লোরিডার ইনস্টিটিউট ফর নিউরোডিজেনোরেটিভ ডিজিজেস-এর গবেষক ড. কেলিঅ্যান নিওটিস এবং তাঁর দল এই গবেষণা পরিচালনা করেছেন।
গবেষণায় মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বায়োমার্কার, যেমন – অ্যামাইলয়েড এবং টাউ প্রোটিনের মাত্রা, রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
আলঝেইমার্স একটি জটিল রোগ, যা স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাভাবনার ক্ষমতাকে ধীরে ধীরে কেড়ে নেয়।
বর্তমানে এর কোনো নিরাময় নেই, তবে জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের মাধ্যমে রোগের অগ্রগতি হয়তো বিলম্বিত করা যেতে পারে।
এই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, ঘুমের ধরন, মানসিক চাপ কমানো, এবং শরীরের অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে উৎসাহিত করা হয়েছে।
গবেষণায় অংশ নেওয়া ৬১ বছর বয়সী পেনী অ্যাশফোর্ড-এর অভিজ্ঞতা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
একসময় যিনি কথা বলতেও সমস্যা অনুভব করতেন, তিনি জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তনের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য উন্নতি লাভ করেছেন।
তাঁর টাউ প্রোটিনের মাত্রা কমেছে এবং মস্তিষ্কের প্রদাহও হ্রাস পেয়েছে।
অ্যাশফোর্ড-এর এই পরিবর্তন প্রমাণ করে যে, সঠিক জীবনযাত্রার মাধ্যমে আলঝেইমার্সের ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
গবেষকরা বলছেন, এই ধরনের রক্ত পরীক্ষা আলঝেইমার্স রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে।
ভবিষ্যতে, এই পরীক্ষাগুলো ব্যাপক ব্যবহারের মাধ্যমে রোগটিকে প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।
তবে, তাঁরা এও মনে করেন যে, এই পরীক্ষাগুলো এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং এর নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, আলঝেইমার্স সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো এবং প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ, এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে জীবন যাপন করা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়া, পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আক্রান্ত ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করা প্রয়োজন।
গবেষকরা মনে করেন, আলঝেইমার্সের ঝুঁকি কমাতে এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন