যুক্তরাষ্ট্রে অ্যামাজনের প্রাক্তন নারী ডেলিভারি চালকের মামলা: ট্রাম্পের নির্দেশে কর্মসংস্থান কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ।
যুক্তরাষ্ট্রে অ্যামাজনের একজন প্রাক্তন নারী ডেলিভারি চালক, লিয়া ক্রস, দেশটির ফেডারেল কর্মসংস্থান সুযোগ কমিশন (ইইওসি)-এর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তার অভিযোগ, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের পর ইইওসি তার লিঙ্গ বৈষম্যের মামলাটি বাতিল করেছে।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, লিয়া ক্রস-এর অভিযোগ ছিল, অ্যামাজন নারী চালকদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও বাথরুমের সুবিধা দিতে ব্যর্থ হয়ে তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। এর ফলে নারী চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের একটি নির্বাহী আদেশের ফলস্বরূপ, ইইওসি ‘বৈষম্যমূলক প্রভাবের দায়বদ্ধতা’র ভিত্তিতে হওয়া অভিযোগগুলোর তদন্ত বন্ধ করে দেয়। এই ‘বৈষম্যমূলক প্রভাব’ ধারণা অনুযায়ী, কোনো নীতি যদি আপাতদৃষ্টিতে নিরপেক্ষ হয়, কিন্তু বিভিন্ন গোষ্ঠীর জন্য অযাচিত বাধা তৈরি করে, তবে তাকে বৈষম্যমূলক হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।
ট্রাম্প প্রশাসন এই ধারণাকে ‘মেধাতন্ত্রের পরিপন্থী’ হিসেবে বিবেচনা করে এর বিরোধিতা করে।
আদালতে দায়ের করা মামলায় লিয়া ক্রস, ইইওসিকে তার অভিযোগ পুনরায় তদন্ত করার নির্দেশ দিতে এবং নতুন নিয়ম কার্যকর করা থেকে বিরত রাখতে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। এছাড়াও, ইইওসি-কে তাদের বাতিল করা ‘বৈষম্যমূলক প্রভাব’-এর ভিত্তিতে হওয়া অভিযোগগুলোর একটি তালিকা জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ইইওসি জানিয়েছে, তারা ২০১৯ সালের নাগরিক অধিকার আইনের অধীনে হওয়া অভিযোগগুলো বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আইনের অধীনে, কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হওয়া কর্মীদের অধিকার রক্ষার কথা বলা হয়েছে।
মামলার আইনজীবী কার্লা গিলব্রাইড বলেন, “ইইওসি-র এই ধরনের অভিযোগগুলো খারিজ করার কোনো অধিকার নেই, যতক্ষণ না তারা এর সত্যতা যাচাই করে দেখছে। প্রেসিডেন্ট একটি নির্দিষ্ট ধরনের বৈষম্য পছন্দ করেন না বলেই, কোনো অভিযোগের সত্যতা যাচাই না করে, তা বাতিল করে দেওয়া যায় না।”
জানা গেছে, ইইওসি-এর এই সিদ্ধান্তের ফলে শুধুমাত্র লিয়া ক্রসের মামলাই নয়, আরও অনেকগুলো মামলা বাতিল করা হয়েছে, যার মধ্যে ট্রান্সজেন্ডার কর্মী এবং শিৎজ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আসা বর্ণবৈষম্যের অভিযোগও রয়েছে।
লিয়া ক্রস, ২০১৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অ্যামাজনের ডেলিভারি বিভাগে কাজ করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, কাজের সময় বাথরুমের বিরতি পাওয়া কঠিন ছিল, তাই তাকে বিশেষ সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হতো।
অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছে, তাদের কর্মীরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে কাজ করে এবং তারা কর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত বিশ্রামের ব্যবস্থা করে থাকে।
বর্তমানে, এই মামলার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আদালত এখন ইইওসি’র বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস