শিরোনাম: অ্যামাজনে মিলছে সৌরবিদ্যুৎ চালিত “ছোট বাড়ি”: বাংলাদেশের জন্য কি এটি একটি বিকল্প?
বর্তমানে, আধুনিক বিশ্বে ছোট আকারের বাড়ির ধারণা বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। পরিবেশ-বান্ধব এবং সাশ্রয়ী মূল্যের বাসস্থান হিসেবে এর কদর বাড়ছে।
এবার এই ধারণাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে এসেছে অনলাইন বাণিজ্য সংস্থা অ্যামাজন। তারা তাদের প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করছে প্রিফেব্রিকেটেড, বা আগে থেকে তৈরি করা ছোট আকারের বাড়ি, যা সৌরবিদ্যুৎ দ্বারা চালিত এবং ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী কাস্টমাইজও করা যাবে।
এই বাড়িগুলোর প্রাথমিক মূল্য শুরু হচ্ছে প্রায় ১০,০০০ মার্কিন ডলার থেকে, যা বাংলাদেশি টাকায় (আনুমানিক) প্রায় ১১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। তবে, এটি একটি আনুমানিক হিসাব, যা সময়ের সাথে বিনিময় হারের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হতে পারে।
এই ধরনের ছোট আকারের বাড়িগুলো তৈরি করা হয়েছে টেকসই উপকরণ দিয়ে, যেমন – ইস্পাত। এগুলো প্রতিকূল আবহাওয়াতেও টিকে থাকতে সক্ষম।
এই বাড়িগুলো তৈরি করা হয় খুবই দ্রুত, যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই গ্রাহকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
এই বাড়িগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এতে সৌর প্যানেল যুক্ত করা হয়েছে, যা বাড়ির বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পারে। এর ফলে বিদ্যুৎ বিলের খরচ কমানো সম্ভব।
এছাড়াও, বাড়িগুলোতে রয়েছে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। রান্নাঘরের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস, যেমন – ফ্রিজ, ওভেন এবং স্টোরেজ স্পেস তৈরি করা হয়েছে।
বাড়ির ভেতরের স্থানটিকে গ্রাহকের প্রয়োজন অনুযায়ী সাজানোরও সুযোগ রয়েছে। গ্রাহক চাইলে অতিরিক্ত মূল্যে বড় আকারের বাড়ি তৈরি করতে পারেন, যেখানে একাধিক বেডরুমের ব্যবস্থা থাকবে।
এছাড়াও, দরজা, জানালা এবং ভেতরের রং পছন্দের সুযোগ তো থাকছেই।
কিন্তু, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ধরনের বাড়ির ধারণা কতটা উপযোগী? আমাদের দেশে সাধারণত পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি থাকে, তাই ছোট আকারের বাড়িতে স্থান সংকুলান একটি সমস্যা হতে পারে।
তবে, শহরাঞ্চলে যেখানে জমির দাম অনেক বেশি, সেখানে এই ধরনের বাড়ি একটি বিকল্প হতে পারে। এছাড়া, সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের ধারণাটি বাংলাদেশের জন্য খুবই উপযোগী, কারণ এতে পরিবেশের সুরক্ষা হয় এবং বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো সহজ হয়।
তবে, এই ধরনের বাড়ি আমদানি করতে শুল্ক এবং পরিবহন খরচ যুক্ত হবে, যা চূড়ান্ত দামকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই, বাংলাদেশে এর বাজার তৈরি করতে হলে সরকারের নীতি সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।
স্থানীয় পর্যায়ে এই ধরনের বাড়ি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলে, তা একদিকে যেমন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, তেমনি সাশ্রয়ী মূল্যে বাসস্থানের চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে।
সব মিলিয়ে, অ্যামাজনের এই উদ্যোগটি একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে। তবে, বাংলাদেশের জন্য এটি কতটা উপযোগী হবে, তা নির্ভর করবে এখানকার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি এবং মানুষের চাহিদার উপর।
ভবিষ্যতে, যদি স্থানীয়ভাবে এই ধরনের বাড়ি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে এটি নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হবে।
তথ্য সূত্র: পিপল