আশ্চর্যজনক! এমিলিয়া ইয়ারহার্টের বিমান খোঁজে অভিযানে নামছে দল

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট: এক কিংবদন্তীর অন্তর্ধান রহস্য, এখনো কি সমাধান হবে?

বিংশ শতাব্দীর অন্যতম আলোচিত নারী বৈমানিক অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্টের ১৯৩৭ সালে প্রশান্ত মহাসাগরে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা আজও মানুষের মনে কৌতূহল জাগায়। আট দশক পরেও তাঁর অন্তর্ধানেরহস্য সমাধানে নতুন করে তৎপরতা শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি, তাঁর বিমানের সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষ অনুসন্ধানের জন্য দুটি পৃথক অভিযান চালানো হচ্ছে। এই অনুসন্ধানে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা হয়তো বহু প্রতীক্ষিত সেই উত্তর দিতে পারে।

ইয়ারহার্ট এবং তাঁর নাবিক ফ্রেড নুুনান ১৯৩৭ সালের ২ জুলাই বিশ্বজুড়ে বিমান ভ্রমণের সময় হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি একটি স্থানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। এরপর তাঁদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

তাঁদের বিমান, লকহিড ১০ই ইলেক্ট্রা, সম্ভবত জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার কারণে বিধ্বস্ত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে, তাঁদের ভাগ্যে আসলে কি ঘটেছিল, তা নিয়ে আজও ধোঁয়াশা বিদ্যমান।

এই রহস্যের জট খুলতে বর্তমানে দুটি ভিন্ন তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে। একটি তত্ত্ব অনুযায়ী, ইয়ারহার্ট ও নুুনান হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি কোথাও বিধ্বস্ত হন।

অন্য একটি তত্ত্বের মতে, তাঁরা নিকটবর্তী একটি দ্বীপ, নিকুমারোরোতে (Nikumaroro) অবতরণ করেছিলেন।

নিকুমারোরো দ্বীপটি অস্ট্রেলিয়া ও হাওয়াইয়ের মাঝামাঝি অবস্থিত। এই দ্বীপে তাঁদের বিমানের কিছু অংশ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হয়।

এই লক্ষ্যে, একটি বিশেষ দল সেখানে অনুসন্ধান চালাবে। অনুসন্ধানকারীরা একটি অপ্রত্যাশিত বস্তুর সন্ধান পেয়েছেন, যা সম্ভবত বিমানের একটি অংশ হতে পারে।

২০১৬ সালে, একজন মার্কিন নৌবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য, মাইক অ্যাশমোর, স্যাটেলাইট চিত্রের মাধ্যমে দ্বীপের একটি লেগুনে (lagoon) এই বস্তুটি শনাক্ত করেন। তাঁর ধারণা, এটি সম্ভবত বিমানের একটি অংশ।

অন্যদিকে, একটি বিশেষজ্ঞ দল হাওয়াই দ্বীপের কাছে সমুদ্র তলদেশে অনুসন্ধানের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো, ইয়ারহার্টের বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করা।

এই অনুসন্ধানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। তারা সোনার (sonar) এবং ম্যাগনেটোমিটারের (magnetometer) মতো সরঞ্জাম ব্যবহার করে সমুদ্রের তলদেশ স্ক্যান করবে।

এই অনুসন্ধানের জন্য তারা আনুমানিক ৮ থেকে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (৮৪ থেকে ১০৫ কোটি বাংলাদেশী টাকা) সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে।

তবে, এই দুটি অভিযানের ফল কী হবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। ইয়ারহার্টের অন্তর্ধান রহস্য সমাধান করতে হলে, উভয় তত্ত্বের স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ খুঁজে বের করতে হবে।

অ্যামেলিয়া ইয়ারহার্ট ছিলেন একজন সাহসী নারী, যিনি ১৯৩০-এর দশকে বিমানের জগতে নারীদের জন্য পথ খুলেছিলেন। তাঁর জীবন ও কর্ম আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।

তাঁর অন্তর্ধানেরহস্য উন্মোচন হলে, তা শুধু একটি ব্যক্তিগত ঘটনার সমাধান হবে না, বরং বিশ্বজুড়ে বিমান চালনার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় যুক্ত হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *