থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্র নিয়ে মন্তব্যে আমেরিকান অধ্যাপকের ১৫ বছরের জেল?

থাইল্যান্ডে রাজতন্ত্রের অবমাননার অভিযোগে এক মার্কিন অধ্যাপকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই ঘটনায় ওই শিক্ষাবিদের কয়েক বছর কারাদণ্ড হতে পারে। থাইল্যান্ডের কঠোর রাজতন্ত্র অবমাননা আইনের অধীনে বিদেশি নাগরিককে অভিযুক্ত করার ঘটনা বিরল।

মঙ্গলবার অধ্যাপক পল চেম্বার্সকে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি দেশটির সামরিক বাহিনী এবং রাজনীতি বিষয়ক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত।

অধ্যাপক চেম্বার্স নারেসুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং আন্তর্জাতিক একটি ওয়েবসাইটে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। থাইল্যান্ডের আইনে, রাজা, রানী বা উত্তরসূরীর সমালোচনা করলে ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

যে কেউ রাজতন্ত্র অবমাননার অভিযোগ দায়ের করতে পারে এবং দোষী সাব্যস্ত হলে কয়েক দশক পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

অধ্যাপক চেম্বার্সের আইনজীবী জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। চেম্বার্স অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

আদালতের শুনানির আগে চেম্বার্স সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাঁকে কেন অভিযুক্ত করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তিনি আশঙ্কা করছেন, তাঁর ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, তারা চেম্বার্সের জন্য কনস্যুলার সহায়তা প্রদান করছে। যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে।

তারা থাই কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা রক্ষার আহ্বান জানাচ্ছে।

থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের অভিযোগ দেশের মুক্তচিন্তা এবং শিক্ষার পরিবেশকে আরও সংকুচিত করবে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই অভিযোগগুলো থাইল্যান্ডে শিক্ষাঙ্গনে স্বাধীনতার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি করেছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও থাইল্যান্ডে বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাজতন্ত্র অবমাননার অভিযোগ উঠেছে।

ইতিমধ্যে থাইল্যান্ডের পার্লামেন্টে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ের হওয়া মামলার আসামিদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার একটি বিল উত্থাপনের কথা রয়েছে। তবে, এই বিলে রাজতন্ত্র অবমাননার অভিযোগ অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, চেম্বার্সের মামলার কারণে থাইল্যান্ড আন্তর্জাতিক মহলের সমালোচনার শিকার হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *