আমেরিকার সবকিছু ত্যাগ করা: কতটা কঠিন?

মার্কিন জীবন থেকে মুক্তি: সবকিছু থেকে কি সত্যিই নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব?

বর্তমানে, আমেরিকাতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই তাদের জীবন থেকে আমেরিকান প্রভাবকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে চাইছেন।

তাদের মধ্যে একজন হলেন লেখক, যিনি তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। তিনি কিভাবে আমেরিকান পণ্য, পরিষেবা এবং সংস্কৃতির প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চেয়েছেন, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

এই লেখকের মূল ধারণা হলো, তিনি তার জীবন থেকে আমেরিকান সবকিছু বর্জন করতে চান। এর কারণ হিসেবে তিনি বর্তমান আমেরিকার রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করেছেন।

তিনি তার এই সিদ্ধান্তের সমর্থনে কিছু নিয়ম তৈরি করেছেন, যা তার জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে।

নিয়মগুলো হলো:

  1. কোনো আমেরিকান পণ্য কেনা বা কোনো আমেরিকান পরিষেবা ব্যবহার করা যাবে না।
  1. যদি কোনো আমেরিকান পণ্য আগে থেকেই কেনা থাকে, তবে সেটি নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। তবে সেটি নষ্ট হয়ে গেলে, তার বদলে অন্য কোনো আমেরিকান পণ্য ব্যবহার করা যাবে না।
  1. আমেরিকান কোনো শিল্পী (লেখক, সঙ্গীতশিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা ইত্যাদি) এর কাজ বর্জন করতে হবে।

এই নিয়মগুলো মেনে চলা বেশ কঠিন। লেখক প্রযুক্তি, খাদ্য, পোশাক, বিনোদন এবং আর্থিক বিষয়গুলোতে আমেরিকান প্রভাব কমাতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

উদাহরণস্বরূপ, তিনি তার গুগল বা অ্যাপল-এর মতো প্রযুক্তি পণ্যের পরিবর্তে ইউরোপীয় পণ্য ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি তার স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপের জন্য জার্মান এবং ফরাসি ব্র্যান্ড বেছে নিয়েছেন।

তবে, প্রযুক্তি থেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি পাওয়া কঠিন। কারণ অনেক পণ্যের যন্ত্রাংশ তৈরি হয় আমেরিকায়, যা বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও, সফটওয়্যার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সমস্যা রয়েছে।

গুগল ম্যাপ, জিমেইল, নেটফ্লিক্স-এর মতো পরিষেবাগুলোর পরিবর্তে তাকে অন্যান্য বিকল্প বেছে নিতে হয়েছে।

খাবার এবং পোশাকের ক্ষেত্রেও একই ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। আমেরিকান খাদ্য প্রস্তুতকারকদের বিভিন্ন ব্র্যান্ড তিনি তালিকাভুক্ত করেছেন, যেগুলি তিনি বর্জন করেছেন।

পোশাকের ক্ষেত্রে, তিনি লেভি-স-এর পরিবর্তে জার্মানির তৈরি জুতা এবং জাপানি পোশাক ব্যবহার করতে শুরু করেছেন।

সোশ্যাল মিডিয়াতেও পরিবর্তন এনেছেন লেখক। তিনি টুইটার এবং ব্লুস্কাই অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে, নতুন একটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা শুরু করেছেন।

আর্থিক দিক থেকেও কিছু সমস্যা ছিল। ক্রেডিট কার্ড এবং পেনশন স্কিমের মতো বিষয়গুলোতে আমেরিকান প্রভাব এড়িয়ে চলা কঠিন।

এছাড়া, ফুটবল ভালোবাসেন এমন একজন ব্যক্তির জন্য, একটি আমেরিকান মালিকানাধীন ফুটবল দলের সমর্থন করাটাও একটি দ্বিধাদ্বন্দ্বে পরিণত হয়েছে।

এই নিবন্ধে, লেখক তার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে দেখিয়েছেন কিভাবে একজন ব্যক্তি আমেরিকান প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেন। তবে, তিনি এও স্বীকার করেছেন যে, সম্পূর্ণভাবে এটি করা সম্ভব নয়।

কিছু ক্ষেত্রে আপস করতে হয়।

পরিশেষে, লেখক বলেছেন, এই কাজটি আধুনিক জীবন এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধাগুলো থেকে দূরে থাকার উদ্দেশ্যে নয়। বরং, এটি আমেরিকার থেকে দূরে সরে এসে ইউরোপের দিকে যাওয়ার একটি প্রচেষ্টা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *