মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভোক্তাদের উপর আর্থিক চাপ: একটি বিশ্লেষণ
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বর্তমানে ভোক্তাদের উপর আর্থিক চাপ বাড়ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং সুদের হারের কারণে অনেক আমেরিকান নাগরিক অর্থনৈতিকভাবে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই পরিস্থিতি তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করছে এবং ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রেও সমস্যা সৃষ্টি করছে।
এই পরিস্থিতিতে, ঋণের বোঝা বাড়ছে এবং খেলাপি হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। ক্রেডিট কার্ড এবং গাড়ির ঋণের কিস্তি পরিশোধে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। ছাত্র ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ছাত্র ঋণ পরিশোধের উপর যে স্থগিতাদেশ ছিল, তা তুলে নেওয়ার পর বকেয়া ঋণের পরিমাণ বেড়েছে, যা অনেকের ক্রেডিট স্কোরকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক আমেরিকান এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য “কিনুন, পরে পরিশোধ করুন” (Buy Now, Pay Later) স্কিমের ওপর নির্ভরশীল হচ্ছেন। এই স্কিমগুলি তাৎক্ষণিক খরচ মেটাতে সাহায্য করলেও, অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
মুদি দোকানের জিনিস কেনার মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য এই ধরনের স্কিমের ব্যবহার বাড়ছে, যা একটি গভীর উদ্বেগের বিষয়।
অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং নীতিগত পরিবর্তনের কারণে, ভোক্তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু নীতি, বিশেষ করে শুল্ক বৃদ্ধি, এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
এই কারণে অনেক আমেরিকান তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত এবং তাদের মধ্যে ব্যয় সংকোচনের প্রবণতা বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক দুর্বলতা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
যদিও বাংলাদেশের অর্থনীতি সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়, তবুও বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেশেও কিছু প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা নেওয়া উচিত। আমাদের দেশেও মূল্যস্ফীতি একটি উদ্বেগের কারণ।
তাই, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে এমন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, যা নাগরিকদের আর্থিক চাপ কমাতে সহায়তা করবে। এছাড়া, ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়ানো এবং ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করার গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে উৎসাহিত করতে হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন