গাজা উপত্যকায় বন্দী একজন আমেরিকান-ইসরায়েলি নাগরিককে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে হামাস। সোমবার (গতকাল) এই মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল, যা সম্ভবত দুই পক্ষের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধবিরতি স্থাপনের একটি পদক্ষেপ হতে পারে।
খবরটি এমন সময়ে এসেছে যখন গাজায় মানবিক সংকট গভীর হচ্ছে এবং উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা এখনো বিদ্যমান।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের সীমান্ত অতিক্রম করে চালানো আক্রমণের সময় এডান আলেকজান্ডার নামের ওই ব্যক্তিকে বন্দী করা হয়। এরপর থেকেই তিনি গাজায় বন্দী ছিলেন।
হামাসের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি একটি ‘শুভ ইঙ্গিত’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছেন এবং তিনি এই অঞ্চলে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করছেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, এখনো পর্যন্ত ৫৯ জন জিম্মি তাদের হেফাজতে রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৪ জন জীবিত আছে বলে জানা গেছে, বাকিদের ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।
হামাস-এর হামলায় প্রায় ২৫০ জন জিম্মিকে বন্দী করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে অনেককে এরই মধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েল এখনো গাজায় তাদের সামরিক অভিযান জোরদার করার পরিকল্পনা করছে। তারা গাজার কিছু এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে এবং সেখানকার অধিবাসীদের আবারও বাস্তুচ্যুত করার হুমকি দিচ্ছে।
গাজায় মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। সেখানকার বাসিন্দারা খাদ্য ও পানির তীব্র সংকটে ভুগছে।
ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সেখানে খাদ্য সংকট আরও বাড়ছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার এই জিম্মি মুক্তির বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে তারা জানিয়েছে, এডান আলেকজান্ডারকে ফিরিয়ে আনার জন্য একটি ‘নিরাপদ করিডোর’ তৈরি করা হয়েছে।
মুক্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পরে, ইসরায়েল গাজায় তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখবে বলে জানা গেছে।
নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে জিম্মিদের মুক্ত করতে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনেকে মনে করেন, গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পেছনে নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫২,৮০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।
হামাসের হামলায় নিহত হয়েছিল প্রায় ১,২০০ জন ইসরায়েলি।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস