পালাবার হিড়িক! আমেরিকায় ফের জেল ভাঙা, চাঞ্চল্যকর ঘটনা!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কারাগার থেকে পালানোর ঘটনাগুলো প্রায়ই সংবাদের শিরোনাম হয়, যা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করে। সম্প্রতি, নিউ অরলিন্স এবং আরকানসাসে ঘটা দুটি আলোচিত ঘটনা আবারও সেই আগ্রহকে উস্কে দিয়েছে।

নিউ অরলিন্সের ঘটনায়, একটি কারাগারের দেয়ালের ছিদ্র দিয়ে ১০ জন বন্দী পালিয়ে যায়, যাদের মধ্যে এখনো কয়েকজনকে ধরতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, পালানোর পেছনে অভ্যন্তরীণ কারো সহযোগিতা ছিল। এর আগে, ২০১৬ সালে মেক্সিকোর কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী “এল চাপো” একটি সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে কারাগার থেকে পালিয়ে যান।

অন্যদিকে, আরকানসাসে সাবেক এক পুলিশ প্রধান, যিনি খুনের দায়ে কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন, কারাগার থেকে পালিয়ে যান। কারাগারের সিসিটিভি ফুটেজে তাকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মতো পোশাক পরে পালাতে দেখা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের আদালত থেকে মুক্তি পাওয়া বা পালিয়ে যাওয়া বন্দীদের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রায় ১,৪০০ জনের বেশি বন্দী পালিয়ে যাওয়ার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন। এমনকি, দীর্ঘকাল পলাতক থাকার রেকর্ডও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের।

কারাগার থেকে পালানোর এই ধরনের ঘটনাগুলো প্রায়ই মানুষের মনে কৌতূহল জাগায়। কখনো কখনো এই ঘটনাগুলো সিনেমা বা টিভি সিরিজের বিষয় হয়। যেমন, ডেভিড সুইট এবং রিচার্ড ম্যাট-এর ড্যানেমোরা কারাগার থেকে পালানোর ঘটনা নিয়ে একটি সিরিজ তৈরি হয়েছিল।

তবে, কারাগার থেকে পালানোর ঘটনা নতুন নয়। ১৯৬২ সালে, কুখ্যাত আলকাট্রাজ কারাগার থেকে তিনজন বন্দী পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। যদিও তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছিল, তা আজও রহস্য। তাদের পালানোর ঘটনা নিয়ে “এসকেপ ফ্রম আলকাট্রাজ” নামে একটি সিনেমাও তৈরি হয়েছে, যা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে।

এই ধরনের ঘটনার কারণ হিসেবে কারাগারের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং জনবলের অভাবকে অনেক সময় দায়ী করা হয়। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, জনবলের অভাবে কর্মকর্তাদের ভুল করার সম্ভাবনা বাড়ে, যা পালানোর পথ তৈরি করে। এছাড়াও, পুরনো ও দুর্বল অবকাঠামোও এক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে ঘটা এইসব ঘটনার মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়, আর তা হলো, কারাগার থেকে পালানোর ঘটনাগুলো শুধু অপরাধীদের দুঃসাহসিকতাই প্রকাশ করে না, বরং এটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং আইনের শাসনের প্রতিও একটি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *