আমেরিকার ‘সুইজারল্যান্ড’-এ ৫ দিনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা!

শিরোনাম: আমেরিকার ‘সুইজারল্যান্ড’-এর পথে: কলোরাডোর সান জুয়ান পর্বতমালায় ট্রেকিংয়ের অভিজ্ঞতা

বাংলাদেশের ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য, আমেরিকার কলোরাডোর সান জুয়ান পর্বতমালা একটি অসাধারণ গন্তব্য হতে পারে। এই পর্বতমালাকে প্রায়শই “আমেরিকার সুইজারল্যান্ড” হিসাবে উল্লেখ করা হয়, কারণ এখানকার দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর।

সম্প্রতি, ট্রেকিং এবং অ্যাডভেঞ্চারের প্রতি আগ্রহী একজন ভ্রমণকারীর সান জুয়ান পর্বতমালায় পাঁচ দিনের এক বিশেষ অভিজ্ঞতার কথা জানা গেছে। আসুন, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এই অঞ্চলের ট্রেকিং সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিই।

সান জুয়ান পর্বতমালা: ভূ-স্বর্গ

কলোরাডোর দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে অবস্থিত সান জুয়ান পর্বতমালা, রুক্ষ পর্বতশৃঙ্গ এবং গভীর উপত্যকা নিয়ে গঠিত। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের কারণে ট্রেকিং এবং হাইকিং-এর জন্য এটি একটি আদর্শ স্থান।

এই অঞ্চলে ১৪,০০০ ফুটের বেশি উচ্চতার অনেক পর্বতশৃঙ্গ (যেগুলোকে “ফোরটিনার্স” বলা হয়) রয়েছে। যারা ট্রেকিং ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই পর্বতমালা একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা দিতে পারে।

হুট-টু-হুট ট্রেকিং-এর ধারণা

এই অঞ্চলের ট্রেকিং-এর একটি বিশেষ দিক হলো “হুট-টু-হুট” ব্যবস্থা। হুট-টু-হুট ট্রেকিং হলো এক ধরনের অ্যাডভেঞ্চার যেখানে ট্রেকাররা একাধিক দিন ধরে পর্বতের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে (হুট) বিশ্রাম নেয়।

এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে রাতে থাকার এবং খাবার-দাবারের সুব্যবস্থা থাকে, যা ট্রেকিংকে আরও আরামদায়ক করে তোলে। সান জুয়ানেও এই ধরনের আধুনিক সুবিধা রয়েছে।

অভিজ্ঞতা: একটি ট্রেকিং যাত্রা

পর্যটকদের জন্য, সান জুয়ান মাউন্টেন গাইডস-এর মতো অভিজ্ঞ ট্যুর অপারেটররা এই অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ট্রেকিং প্যাকেজ অফার করে থাকে। এই প্যাকেজগুলোর মধ্যে একটি হলো পাঁচ দিনের “মিলিয়ন ডলার ট্রেক”।

এই ট্রেকিং-এর যাত্রা শুরু হয় কলোরাডোর আউরে শহরে, যা সান জুয়ান পর্বতমালায় প্রবেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

ট্রেকিং-এর সময় আবহাওয়ার পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক। যাত্রাপথে অপ্রত্যাশিত বৃষ্টি এবং তুষারপাতের মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। ট্রেকারদের দলটিতে বিভিন্ন ধরনের মানুষ ছিলেন, যাদের মধ্যে ছিলেন অভিজ্ঞ ট্রেকার থেকে শুরু করে সাধারণ ভ্রমণকারীরাও।

যাত্রাপথের আকর্ষণ

এই ট্রেকিং-এর সময় ট্রেকাররা প্যারাডাইজ বেসিন, ওপাস হুট, রেড মাউন্টেন আলপাইন লজ এবং মাউন্ট হেডেন ব্যাককান্ট্রি লজের মতো বিভিন্ন স্থানে রাত্রিযাপন করেন। এই স্থানগুলো থেকে তারা সান জুয়ানের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।

ট্রেকিং-এর সময় বন্যপ্রাণী, যেমন – হরিণের পাল, বিভিন্ন ধরনের ফুল এবং পাখির দেখা পাওয়া যায়, যা এই অভিজ্ঞতাকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। ইমোজেন পাস-এর মতো উঁচু স্থানগুলো অতিক্রম করা ট্রেকারদের জন্য একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা।

খরচ এবং প্রস্তুতি

সান জুয়ান পর্বতমালায় ট্রেকিং-এর খরচ বিভিন্ন প্যাকেজের উপর নির্ভর করে, তবে সাধারণত এটি জনপ্রতি প্রায় ২,২৯৯ মার্কিন ডলার থেকে শুরু হয়। ট্রেকিং-এর জন্য উপযুক্ত পোশাক, জুতো এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সঙ্গে নেওয়া জরুরি।

উপসংহার

সান জুয়ান পর্বতমালা, ট্রেকিং এবং প্রকৃতির কাছাকাছি সময় কাটানোর জন্য একটি চমৎকার স্থান। যারা অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন এবং নতুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তাদের জন্য এই স্থানটি একটি আদর্শ গন্তব্য হতে পারে।

তথ্য সূত্র: ট্রাভেল + লেজার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *