হংকং: ফের সক্রিয় অ্যামনেস্টি, নতুন অফিসের ঘোষণা!

হংকং-এ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে, নির্বাসনে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। চীনের নতুন নিরাপত্তা আইনের কারণে ২০২১ সালে হংকং-এ তাদের কার্যালয় বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল সংস্থাটি।

সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডে নিবন্ধিত হয়ে ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল হংকং ওভারসিজ’ (এআইএইচকেও) নামে নতুন এই কার্যালয়টি চালু করা হয়েছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, নতুন এই অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন হংকংয়ের অধিকারকর্মীরা, যারা অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। এআইএইচকেও-এর নির্বাহী পরিচালক চি-ম্যান লুক এই নতুন পদক্ষেপকে হংকংয়ে মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে অ্যামনেস্টির “নতুন অধ্যায়” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

তিনি হংকংয়ের প্রবাসীদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার কথাও জানান।

২০১৯ সালে হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর চীন সরকার অঞ্চলটিতে কঠোর নিরাপত্তা আইন জারি করে। এর ফলে বহু রাজনৈতিক কর্মী, বিরোধী দলের সদস্য এবং সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অথবা তাদের হয়রানি করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বিবৃতিতে বলেছে, নতুন এই অফিসের প্রধান লক্ষ্য হবে হংকংয়ে মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা এবং সেখানকার মানুষের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হওয়া।

অ্যামনেস্টির সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, এই পদক্ষেপ “আমরা যে কোনো চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত, তা প্রমাণ করে”।

মানবাধিকার সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হংকংয়ে ভিন্নমতের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে, হংকংয়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে বলে মনে করেন অনেকে। গত সপ্তাহে, ২০১৯ সালের একটি বিক্ষোভের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজন সমাজকর্মীকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও, চীন সরকার হংকংয়ের নিরাপত্তা আইনের অধীনে এরই মধ্যে ৩২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ১৬৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়েছে।

কর্তৃপক্ষের নিশানায় থাকা ১৯ জন গণতন্ত্রপন্থী কর্মীর বিরুদ্ধে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি, হংকংয়ের একটি প্রভাবশালী বিরোধী দল, ডেমোক্রেটিক পার্টি বিলুপ্ত হয়েছে।

হংকং কর্তৃপক্ষের দাবি, এই নিরাপত্তা আইন অঞ্চলটিতে স্থিতিশীলতা এনেছে। তবে সমালোচকদের মতে, এটি ভিন্নমত দমনের একটি কৌশল।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এই পদক্ষেপ হংকং-এর মানুষের মানবাধিকার রক্ষার লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *